জাতীয়

সোহরাওয়ার্দীর খোলা মাঠই হলো বিনোদন কেন্দ্র

অন্যান্য বছর রাজধানীতে শিশুদের ঈদ বিনোদনের প্রধান ও প্রিয় স্থান ছিল শিশুপার্ক। সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য ১ জানুয়ারি থেকে শিশুপার্কটি বন্ধ রয়েছে। এ তথ্য জানা না থাকায় ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার শত শত শিশু অভিভাবকদের সঙ্গে শিশুপার্কে ছুটে আসে।

Advertisement

শিশুপার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শোনার পর অভিভাবকরা সন্তানদের সান্ত্বনা দিতে অদূরে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন সাপ্তাহিক ছুটির কারণে জাদুঘরও বন্ধ। এরপর জাতীয় জাদুঘর থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী স্বাধীনতা জাদুঘরে নিয়ে যান। সেখানেও একই চিত্র। সাপ্তাহিক ছুটি। শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের খোলা মাঠই হলো শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র।

দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিভাবক ও শিশুরা শিশুপার্ক ও জাতীয় জাদুঘর বন্ধ পেয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ শিশুদের বাদাম কিনে খাওয়াচ্ছেন, কেউ প্লাস্টিকের তৈরি বাতাসে ফোলানো খেলনা কিনে দিচ্ছেন। আবার কেউ লেকের পাড়ে বাতাস খাচ্ছেন, কেউবা শিখা চিরন্তনের সামনে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলছেন।

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা পেশায় ভ্যানচালক ফরজ আলী। পেশাগত কাজে ব্যস্ত থাকায় এমনিতে তিনি স্ত্রী-সন্তানকে সময় দিতে পারেন না। ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিন দুপুরে পাঁচ বছরের মেয়ে হাবিবা ও স্ত্রী হেনাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন।

Advertisement

ফরজ আলী বলেন, ‘মেয়েটি ছাড়াও আর বড় দুই ছেলে রয়েছে। ওরা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছে। মেয়েকে শিশুপার্কে ঘুরতে নিয়ে এসে বন্ধ দেখে জাতীয় জাদুঘরে যাই। সেখানেও বন্ধ দেখে উদ্যানে প্রবেশ করি। মেয়েকে ৮০ টাকা দিয়ে একটা খেলনা কিনে দিয়েছি।’

জিগাতলার বাসিন্দা ফল বিক্রেতা আসাদুর রহমান দুই মেয়েকে নিয়ে উদ্যানের লেকের পাড়ে বসে বাদাম খাচ্ছিলেন। মেয়েদের শিশুপার্কে ঘুরাতে নিয়ে এসে বন্ধ দেখে উদ্যান ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘একবার চেয়েছিলাম মেয়েদের নিয়ে শ্যামলীর শিশু মেলায় যাব। যাতায়াত, প্রবেশ ও রাইড টিকেট মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাবে-এ আশঙ্কায় উদ্যানেই ঘুরিয়ে বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করছি।’

উদ্যানের ভেতর শিখা চিরন্তরের সামনে দেখা যায়, কয়েকজন চীনা নাগরিক একজন বাংলাদেশি তরুণের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তরুণটি তাদের জাতির জনকের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করছিলেন।

Advertisement

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে হাসিনুর রহমান নামে ওই তরুণ জানান, তিনি চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। কয়েকদিন আগে তার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচিত কয়েকজন বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন। ভাষাগত সাহায্যের জন্য তিনি তাদের সঙ্গ দিচ্ছেন।

এমইউ/এনডিএস/পিআর