খেলাধুলা

মিরাজের জোড়া আঘাতে জমে উঠল ম্যাচ

ওভারের প্রথম বলে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে এবং শেষ বলে উইকেটরক্ষক টম লাথামকে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচে পরিণত করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাতেই জমে উঠতে শুরু করেছে নিউজিল্যান্ডের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ।

Advertisement

মুশফিকুর রহীমের বাচ্চাসুলভ ভুলের কারণে জীবন পেয়ে রস টেলরের সঙ্গে ১০৫ রানের জুটি গড়ে ফেলেন কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন। তবে নিজে কখনোই সে অর্থে হাত খুলে খেলতে পারেননি, আড়ষ্ট ছিলেন পুরো ইনিংসেই।

৩২তম ওভারে মেহেদী মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তিনি ধরা পড়েন মিডউইকেটে দাঁড়ানো মোসাদ্দেক সৈকতের হাতে। আউট হওয়ার আগে ৭২ বলে ৪০ রান করেন উইলিয়ামসন। সে ওভারেরই শেষ বলে বাঁহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লাথামও চেষ্টা করেন একই অঞ্চলে বড় শট খেলার।

কিন্তু তিনি ধরা পড়ে যান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে। রানের খাতাই খুলতে ব্যর্থ হন লাথাম। মিরাজের এ জোড়া আঘাতে ফিরে আসে ম্যাচের প্রাণ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৫ ওভার শেষের নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৬৯ রান। শেষ ১৫ ওভারে তাদের প্রয়োজন ৭৬ রান।

Advertisement

এর আগে বাংলাদেশের করা ২৪৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দুই ডানহাতি বোলার মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ওপর চড়াও হন গাপটিল। মাত্র ৫ ওভারে নিয়ে নেন ৩৫ রান।

উপায়অন্ত না দেখে ষষ্ঠ ওভারেই নিজের ডেপুটির হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মাশরাফি। আস্থার প্রতিদান দিতে দ্বিতীয় বল পর্যন্তও যাননি সাকিব।

ব্যাট হাতে ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে তার ৬৪ রানের ইনিংসের ছিলো অগ্রণী ভূমিকা। তবে তিনি তো অলরাউন্ডার, শুধু ব্যাটিং দিয়ে কি আর হয়?

না, হয়নি সাকিব আল হাসানের। বল হাতে নিয়ে নিজের প্রথম বলেই ভয়ঙ্কর মার্টিন গাপটিলকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকেও আউট করার।

Advertisement

সাকিবের করা প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেন গাপটিল। কিন্তু ধরা পড়ে যান লংঅনে দাঁড়ানো তামিম ইকবালের হাতে। আউট হওয়ার আগে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ১৪ বলে ২৫ রান করেন গাপটিল।

এদিকে গাপটিল ফিরে গেলেও ঝড়ো ব্যাটিং চালিয়ে যান কলিন মুনরো। তাই তো মাত্র সপ্তম ওভারেই দলীয় পঞ্চাশ পূরণ করে ফেলে তারা। তবে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী মিরাজের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে হাঁসফাঁস করতে করতে বেশিক্ষণ থাকা হয়নি মুনরোর।

ইনিংসের দশম ওভারের শেষ বলে সাকিবের বোলিংয়ে মিরাজের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৩৪ বলে ২৪ রান করা মুনরো। এরপরই হাল ধরেন টেলর এবং উইলিয়ামসন, গড়েন ১০৫ রানের জুটি। অথচ তাদের জুটিটা ভাঙতে পারতো মাত্র ৬ রানের মাথায়।

ইনিংসের দ্বাদশ ওভারের দ্বিতীয় বলের ঘটনা। সদ্যই উইকেটে আসা রস টেলরের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বিপদে পড়ে যান অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। মিড অফ থেকে তামিম ইকবালের থ্রো ধরে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীম যখন উইকেট ভেঙে দেন, তখনো পপিং ক্রিজের অনেক বাইরে উইলিয়ামসন।

ঘটনাটা হতে পারতো এমন। কিন্তু টাইগার উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীম করে বসেন বাচ্চাসুলভ ভুল। তামিমের করা থ্রোটি সরাসরি ছিলো উইকেট বরাবরই। কিন্তু বাড়তি সতর্কতা নিতে গিয়ে স্ট্যাম্পের সামনে এসে বল ধরে উইকেট ভাঙতে যান মুশফিক। ঠিক তখন তার হাতে লেগে আগেই পড়ে যায় বেলস।

যে কারণে পরে তিনি বল গ্লাভসে জমিয়ে উইকেট ভাঙলেও এবং কেন উইলিয়ামসন নিজের ক্রিকের অনেক বাইরে থাকলেও, বেঁচে যান রানআউট থেকে। আর এ জীবন কাজে লাগিয়ে নিজের দলকে জয়ের দিকে পরিচালিত করে নিয়ে যাচ্ছেন কিউই অধিনায়ক।

দ্বাদশ ওভারে যখন ঘটে এ ঘটনা, তখন ১৬ বল খেলে মাত্র ৮ রান করেছিলেন উইলিয়ামসন। নিউজিল্যান্ডের রান তখন ১১.২ ওভারে ২ উইকেটে ৬১ রান। উইলিয়ামসনের উইকেটটি তখন পড়লে স্কোরকার্ড রূপ নিতো ৩ উইকেটে ৬১ রানে। সেটি হয়নি মুশফিকের ভুলের কারণে।

এসএএস