বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সীমান্ত সুরক্ষা করছে। সবাই ঘুমিয়ে গেলেও জেগে থাকেন তারা। দেশরক্ষা ও সীমান্ত সুরক্ষার গুরুদায়িত্ব তাদের কাঁধে।
Advertisement
সারাদেশের মানুষ যখন ঈদের আনন্দে মেতেছেন ঠিক ওই সময় দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্তে অনেক বিজিবির সদস্য এ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শুধু ঈদের আনন্দ নয়, দেশরক্ষায় নিজ দায়িত্ব পালনে ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি অনেক বিজিবি সদস্য।
দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম বিরামপুর উপজেলা। এ উপজেলার প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা সীমান্ত দিয়ে ঘেরা। এ এলাকার ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে বিজিবির ৪টি বিওপি ক্যাম্প রয়েছে। সীমান্ত রক্ষায় সারাক্ষণ নজরদারি করতে হয় বিজিবিকে।
ভারত-বাংলা দু’দেশের ব্যবধান শুধু কাঁটাতারের বেড়া। এ কাঁটাতারের বেড়া বেয়ে সীমান্তে বেশ কিছু পয়েন্ট দিয়ে চোরাকারবারিরা মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় মালামাল পাচারের জন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। ফলে বিজিবিকে সারাক্ষণ তাদের ওপর নজর রাখতে হয়।
Advertisement
সরেজমিনে ঈদের দিন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিরামপুর ঘাসুড়িয়া সীমান্তের দক্ষিণ দামোদরপুর ৫নং পোস্টে গিয়ে ঘাসুড়িয়া সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবির ল্যান্স নায়েক মো. ফারুক হোসেনের সঙ্গে দেখা হয়। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও তার সঙ্গে কথা হয়।
কথা বলার একপর্যায়ে বিজিবির ল্যান্স নায়েক মো. ফারুক হোসেন বলেন, সকালে আমার ডিউটি পড়ায় ঈদের নামাজ পড়তে পারিনি। আমার মতো আরও অনেক বিজিবি সদস্য ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি। পরিবার নিয়ে ঈদ করার ইচ্ছা থাকলেও দেশরক্ষায় আমাদের তা হয়ে ওঠে না।
তিনি বলেন, আমরা দেশের পাহারাদার। সীমান্ত সুরক্ষার গুরুদায়িত্ব আমাদের কাঁধে। আগে দেশরক্ষা, পরে আত্মরক্ষা।দেশ বাঁচলে পরিবার বাঁচবে।
একই দিন কথা হয় ঘাসুড়িয়া বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার শাহাজাহান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মন চায় পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে। কিন্তু করার কিছু নেই। চাকরির প্রয়োজনে কর্মক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে সাধ্যমতো আনন্দ করি। দেশরক্ষা পবিত্র দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। এটাই আমাদের ঈদ।
Advertisement
একই কথা বললেন বিজিবির ভাইগড় কোম্পানি কমান্ডার নাছের উদ্দিন। তিনি বলেন, দেশরক্ষা ও সীমান্তের মানুষ এবং দেশের মানুষকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের বড় আনন্দ। দেশের প্রতিটি মানুষ আমাদের আপনজন, প্রতিটি পরিবারই আমাদের পরিবার।
এমদাদুল হক মিলন/এএম/এমএস