জাতীয়

কাঞ্চন ব্রিজের টোল নিয়ে ফেসবুক লাইভে সুমন

ঈদে ঘরমুখো মানুষের পথে পথে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয়। তেমনি সিলেট, হবিগঞ্জ, নরসিংদীসহ আশপাশের মানুষকে নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন ব্রিজের টোল আদায়কে কেন্দ্র করে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সে দুর্ভোগ নিয়ে রাতের অন্ধকারে ফেসবুক লাইভে আসেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

Advertisement

ঈদের আগে ঘরে ফেরা মানুষ ব্রিজের টোল দিতে গিয়ে যে মহাদুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তা তুলে ধরে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং নারায়ণগঞ্জের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ আর কষ্টের কথা তুলে ধরে সুমন বলেন, ‘এ রাস্তা দিয়ে যাত্রীদের দ্রুত বাড়ি পৌঁছার কথা। সেখানে শুধু টোলের জন্য দেড় ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় রাস্তায় বসে থাকতে হয়। তাহলে সরকারের এতো খরচ করে তিনশ’ ফিট রাস্তা তৈরি করে লাভ কী হলো?’

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জাগো নিউজকে জানান, গত শুক্রবার (৩১ মে) রাতে নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চল ব্রিজ থেকে ফেসবুক লাইভে কথা বলেন। সেদিন তিনি নিজের জন্মভূমি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে নিজেও পড়েন এ দুর্ভোগে, তাই যাত্রী সাধারণের এ মহাদুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন।

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি এ লাইভ প্রচার করেছেন বলেও জানান সুমন। যেখানেই অনিয়ম, সেখানেই ফেসবুক খুলে লাইভে আওয়াজ তুলছেন তিনি।

Advertisement

ওই রাতে সুমন লাইভে বলেন, ‘আমার লাইভে যারা জয়েন করলেন তাদের সবাইকে সালাম, আদাব ও শুভেচ্ছা। রাত প্রায় ১২টা বাজে। আমি যে জায়গায় দাঁড়াইয়া আছি এটা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন ব্রিজ। আপনারা লেখা দেখতে পাচ্ছেন ব্রিজ এলাকায় এখানে টোল প্লাজা। এখানে টোল তোলা হয়। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন যে এখানে একটা লিস্ট দেয়া আছে, লিস্ট অনুযায়ী টোল তোলা হয়, এ টোলের কী পরিমাণ টাকা নেয়া হয় এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। এখানে যারা পরিচালনা করছেন তাদের নিয়েও কোনো অভিযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘যে জিনিসটা আমরা বলতে চাই, সিলেট থেকে শুরু করে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের সবাই ঢাকাতে তিনশ’ ফিট দিয়ে ঢোকেন। এ রাস্তা দিয়ে, মাত্র চারটা লেন দিয়ে ঢোকে এবং বের হয়। মাত্র চারটা লাইন। টোলের কারণে যখন দাঁড়াইতে হয় ড্রাইভারদেরকে, তখন পিছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি গুলোকে দাঁড়াইয়া থাকতে হয়।’

‘আপনি দেখেন টোলের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি দাঁড়াইয়া থাকতে হয়। আমাকে দেখার পর ম্যানেজমেন্ট আরও একটু স্পিডি করছেন এখন, এটা আমি যখন আসছি, এখানে আধা ঘণ্টা লাগে টোলের টাকা দেয়ার জন্য কী আরও জায়গা করা যায় না,’ বলেন সুমন।

তিনি বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের এ কষ্ট কমানোর জন্য কি লেন বাড়াতে পারে না কর্তৃপক্ষ। টোল তোলার জন্য আরও জায়গা বাড়ানো যায় না। চাইলে কি টোল কর্তৃপক্ষ রাস্তা একটু বাড়াতে পারে না। কারণ ঢাকা শহরে আপনি এত বড় রাস্তা করলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে রাস্তা করছেন বিদেশিদের মতো এখান দিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু টোল তোলার নামে এতো যন্ত্রণা মানুষের। এত সুন্দর রাস্তা, এতে লাভ কী হলো, এতো সুন্দর রাাস্তা কিন্তু টোল তোলার নামে যদি বসে থাকতে হয় লাভ কী হলো। সরকার এতো সুন্দর রাস্তা করলো, আপনি এতো সুন্দর রাস্তা করলেন তাতে লাভ কী?’

Advertisement

সুমন বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে সিলেট যেতে লাগে ৬ ঘণ্টা, আর এ ব্রিজের টোল দিতে লাগে দেড় ঘণ্টা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ রাস্তা করে আলটিমেটলি কোনো লাভ হয় না। আমার কথা যারা শুনতেছেন। নারায়ণগঞ্জের কর্তৃপক্ষকে বলছি, একটু ব্রিজে আসেন। দেখে যান মানুষের কষ্ট কতটুক হয়। নাহলে সরকারের এ উন্নয়ন, তিনশ’ ফিট দিয়ে যেখানে খুব অল্প সময়ে যাওয়া যায়, আপনারা একটু আসেন। আমি নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বলছি। আপনারা ব্রিজে আসেন একটু দেখে যান। মানুষের কী রকম কষ্ট হয়।’

লাইভের শেষ অংশে তিনি জানান, পরিশেষে একটু দেখাইয়া দেই কী লম্বা লাইন। আর কত মানুষ কষ্ট করতেছে।

এফএইচ/এনডিএস/জেআইএম