রাজনীতি

শৈশবের ঈদ ছিল ভারমুক্ত, এখন অনেক দায়িত্ব : রুমিন

‘ঈদের সকালটা শুরু হতো লাল গোলাপের সুভাস দিয়ে। বাবা গোলাপ নিয়ে আসতেন। অনেকগুলো লাল গোলাপ বিছানার পাশে রেখে দিতেন। ঘুম ভেঙে চোখে পড়তো বাবার দেয়া সেই লাল গোলাপ। তারপর দিনের শুরু,’- সংরক্ষিত আসনে বিএনপির একমাত্র সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার শৈশবের ঈদের দিনগুলো ছিল এমনই। কিন্তু এখন তার দায়িত্ব বেড়েছে অনেক। সেই ভারমুক্ত দিনগুলো না থাকলেও স্মৃতিতে সেই মুহূর্ত এখনও জ্বল জ্বল করছে।

Advertisement

সংরক্ষিত আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য (এমপি) হতে যাচ্ছেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। কয়েক দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণ করবেন তিনি। এবারের ঈদ নিয়ে তার পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদ আমাদের বহু বছর ধরে। আমরা যারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আজকে ঈদ আমাদের জন্য একটা কষ্টকর অভিজ্ঞতা। আমাদের লক্ষাধিক নেতাকর্মী জেলের ভেতরে। তৃণমূলের কর্মীরা তাদের এলাকায় যেতে পারে না, ঘরে থাকতে পারে না, তাদের যে কষ্ট, তাদের যে বেদনা সেটা আমাদের আনন্দের সঙ্গে ঈদ করতে দেয় না। বিশেষ করে গত দেড় বছর হয়ে গেছে। তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আপসহীন নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই বয়সে, এই শারীরিক অবস্থায় কারাগারে ঈদ করছেন। সুতরাং এ বন্দি বাংলাদেশে ঈদ আমাদের জন্য খুব সুখের হয় না। তারপরও ঈদ করতে হয়, ঈদ আমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। গতানুগতিকভাবে আমাদের এ উৎসব কাটছে।’

এবারের ঈদে আপনার কী পরিকল্পনা রয়েছে? জবাবে রুমিন বলেন, ‘আমার এলাকা-সরাইল আশুগঞ্জবাসী আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবেন এবং তাদের সঙ্গেই ঈদের দিন আমার মোটামুটি কাটবে। পরিবারের সদস্য আছে, আমার মা আছেন।’

তিনি বলেন, ‘ঈদ সব সময়ই আমার পরিবারের সঙ্গে কাটে। এখন আমার এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদের বড় একটা সময় কাটবে। যেহেতু পরিবারের একমাত্র সন্তান সেক্ষেত্রে আমার দায়িত্বটাও একটু বেশি। বাসার সমস্ত দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হয়।’

Advertisement

শৈশবে ঈদ কেমন কাটতো জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমার মনে হয়, এখন যে আমরা ঈদ পার করি সেটা অনেকটা দায়িত্ব। ছোট বেলার ঈদ ছিল ভারমুক্ত এবং ছোট বেলায় আমার সকালটা শুরু হতো বাবার সঙ্গে। বাবা আমার জন্য গোলাপ নিয়ে আসতেন। অনেকগুলো লাল গোলাপ বিছানার পাশে রেখে দিতেন। ঘুম ভেঙে চোখে পড়তো বাবার দেয়া সেই লাল গোলাপ। তারপর দিনের শুরুটা বাবা-মা আত্মীয় স্বজনরা সবাই আসতেন। আমার মা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ছিলেন। তার অফিসের মানুষজন আসতেন ঈদে দেখা করতে। কুশল বিনিময় করতে। বাবার নেতাকর্মীরা আসতেন। ব্যস্ততায়ই কাটতো। বেশির ভাগ ঈদে আমি বাসায়ই থাকতাম। মেহমানরা আসতেন আমাদের বাসায়।’

তিনি বলেন, ‘আর আমার ঈদ শুরু হতো ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে। কারণ ঈদের নতুন কাপড় কেনা একেবারে চুলের ফিতা থেকে জুতা পর্যন্ত সব নতুন। উৎসাহ আগ্রহ থাকতো এবং ঈদের আগে যেন কেউ দেখে না ফেলে। ঈদ আসার আগে নতুন কোনো কিছু দেখে ফেলা মানে পুরনো হয়ে যাওয়া-ছোটবেলায় একটা সাইক্লোজি ছিল। কিছু লুকিয়ে যত্ন করে রাখা। কে কয়টা কী কিনলো, কে কয়টা গিফট পেলো এসব নিয়ে কাটতো খুব আনন্দের যেটা ফেলে এসেছি। সেটা জীবনে কখনও আর ফিরে পাব না। ভীষণ আনন্দের ছিল ছোটবেলার ঈদ।’

কেএইচ/এনডিএস/জেআইএম

Advertisement