দেশজুড়ে

তিনগুন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ঢাকার টিকিট

পঞ্চগড়ে ঈদের পর রেলে ঢাকাগামী যাত্রীদের আগাম টিকিট কালোবাজারে নির্ধারিত মূল্যের তিনগুন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য ৫৫০ টাকার শোভন চেয়ারের প্রতিটি টিকিট ১৫০০ এবং ১ হাজার ৫৩ টাকার এসি চেয়ারের টিকিট কালোবাজারে ৩ হাজার টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

যেখানে আগের দিন বিকেল থেকে ১৮ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পাওয়া যায় না। সেখানে কালোবাজারে অতিরিক্ত মূল্যের টিকিটের কোনো অভাব নেই। স্টেশনের পাশে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল টিকিটের কালোবাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে।

শনিবার দিনভর পঞ্চগড় সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশনে অবস্থান করে জানা গেছে, ক’দিন ধরে বিকেল হতে না হতেই শুরু হয় টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর প্রতিযোগিতা। ২৯ মে থেকে ধারাবাহিকভাবে ৭ জুন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ঈদের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেট পালা করে স্থানীয় নারী, দিনমজুর ও ভিক্ষুকদের টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয়। পরে তিনগুন বেশি দামে প্রকাশ্যেই সেসব টিকিট বিক্রি করেন।

ঈদের পর ১০ জুন ঢাকা যাওয়ার জন্য একটি টিকিট পেতে শুক্রবার বিকেল থেকে দাঁড়িয়েছিলেন সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের জিয়াবাড়ি গ্রামের রফিজল ইসলাম। ভোরে সাহরির পর কয়েক যুবক এসে তোড়জোড় শুরু করেন। তাদের ঠেলাঠেলিতে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। সারির পেছনে চলে যান রফিজল। সকাল ৯টা থেকে টিকিট প্রদান শুরু হয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। রাতভর লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাননি রফিজল।

Advertisement

এটি পঞ্চগড় রেল স্টেশনের প্রতিদিনের চিত্র। এভাবেই টিকিট নিয়ে প্রতিদিন ভোগান্তি হচ্ছে যাত্রীদের। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, পঞ্চগড়ের মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত টিকিটের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে কালোবাজারি সিন্ডিকেটের হাতে।

রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৩টি ট্রেন পঞ্চগড় থেকে ঢাকা নিয়মিত চলাচল করে। প্রতিদিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে দ্রুতযান এক্সপ্রেস, দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এবং রাত ৯টায় একতা এক্সপ্রেস পঞ্চগড় থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনের মধ্যে দ্রুতযান এক্সপ্রেসে শোভন চেয়ার ৯২টি, এসি চেয়ার ২০টি এবং এসি সিট ১৪টি, পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে শোভন চেয়ার ২৩০টি, এসি চেয়ার ২৪টি ও এসি সিট ১৬টি এবং একতা এক্সপ্রেসে শোভন চেয়ার ৯২টি, এসি চেয়ার ২০টি এবং এসি বার্থ ৫টি পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে দেয়া আছে। বাকি ৫০ শতাংশ টিকেটের জন্য প্রতিদিন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে হয়।

স্টেশন মাস্টার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে আগাম টিকিট দেয়া হয়। যারা লাইনে থাকেন নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে টিকিট দেয়া হয়। এছাড়া আমাদের আর কী করার আছে।

জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এহেতেশাম রেজা বলেন, একটি চক্র লোকজনদের দিয়ে টিকিট কিনে তা বাড়তি দামে বিক্রি করছে বলে আমরাও অভিযোগ করেছি। প্রমাণ না থাকায় তারা অনেকটাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে নজর রাখা হচ্ছে। সনাক্ত করতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement

এফএ/জেআইএম