জাতীয়

যাত্রীর চাপ বাড়ছে, প্রস্তুত ১৫০ লঞ্চ

>> ঢাকা ছাড়ছে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫% বেশি যাত্রী >> টার্মিনালে বসতে দেয়া হয়নি কোনো হকার >> অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা আছে টার্মিনালে

Advertisement

ঈদ সামনে রেখে রেল, সড়কপথের মতো নৌপথেও ঢাকা ছাড়ছে লোকজন। শনিবার সকাল থেকেই যাত্রীরা সদরঘাটে আসতে থাকেন। বেলা যত এগোচ্ছিল বাড়ছিল যাত্রীর সংখ্যা। দুপুরের মধ্যে ঘাটে থাকা বেশিরভাগ লঞ্চ যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রী পরিবহনের জন্য দেড় শতাধিক লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ বা ৬ জুন দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন > এবারের ঈদযাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক : ওবায়দুল কাদের

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাগ-বস্তাসহ পন্টুনে বসেছিলেন মকবুল হোসেন। তিনি ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, তার বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জে। স্ত্রী ও দুই সন্তান গ্রামের বাড়ি থাকে। তিনি সকাল ৯টা থেকে সদরঘাটে এসে পন্টুনে বসে আছেন। কোনো লঞ্চ এখনও ঘাটে আসেনি।

টার্মিনালে ‘কোকো’ লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছিলেন করিম সরদার। তিনি যাবেন বরিশালের হিজলা থানার ধুলখোলা গ্রামে। করিম সরদার গ্রামেই থাকেন, ঢাকায় এসেছিলেন এক আত্মীয়ের কাছ থেকে পাওনা টাকা নিতে। তিনি বলেন, ‘লঞ্চ সন্ধ্যা ৬টায় ছাড়বে। লঞ্চ ঘাটে আইলে বিশ্রাম কইরা নেব।’

দুপুরের দিকে ঘাটে থাকা ঢাকা-বরিশালগামী সুরভী-৮ লঞ্চে গিয়ে দেখা গেল, ডেক প্রায় যাত্রীতে ভরে গেছে। ঢাকার মাতুয়াইলে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন মবিন। তিনি বলেন, ‘জায়গা পাই কি না পাই এজন্য সকাল সকাল লঞ্চে চাইল্যা আসছি। ঈদের সময় তো ভিড় অয়।’

Advertisement

ঘাটে থাকা ঢাকা-দেওয়ানবাড়ী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী কর্ণফুলী-১ লঞ্চে গিয়ে দেখা গেছে লঞ্চ যাত্রীপূর্ণ।

আরও পড়ুন > ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে ২০ প্রস্তাব

সদরঘাটের বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনালের ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর পন্টুন থেকে বরিশালের লঞ্চ ছেড়ে যাবে। ওয়াইজঘাটের টার্মিনাল থেকে পটুয়াখালী ও গলাচিপার লঞ্চ ছেড়ে যাবে।

সদরঘাট ঘুরে দেখা গেছে, টার্মিনাল ও পন্টুনে টহল দিচ্ছে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রস্তুত থাকতে দেখা গেছে।

মূল টার্মিনালের ভিআইপি গেটের ডান পাশে খোলা হয়েছে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার। খোলা হয়েছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম। পন্টুন কিংবা টার্মিনালে কোনো হকারকে বসতে দেয়া হয়নি।

ঢাকা নদীবন্দরের (সদরঘাট) যুগ্ম-পরিচালক (নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) আলমগীর কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘যাত্রী বেশি হলে আমরা আজকে দেড়শর বেশি লঞ্চ দিতে পারব। আমাদের সেই প্রস্তুতি রয়েছে। সামগ্রিক যে পরিস্থিতি তাতে মনে হচ্ছে না ঈদের যাত্রী আজ ওইভাবে নামবে। আমাদের মনে হয় ঈদ যাত্রীদের এবার পছন্দের তারিখ ৩ জুন। নদীপথের যাত্রীরা ঈদে বাড়ি যেতে প্রতি বছরই একটি তারিখ নির্দিষ্ট করে। মনে করছি, মূল ভিড়টা ওইদিনই হবে।’

আরও পড়ুন > ‘শঙ্কা নিয়ে’ স্বস্তির ঈদযাত্রা

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যে যাত্রী যাচ্ছে তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি।’

যুগ্ম পরিচালক আরও বলেন, ‘সদরঘাটে প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে এটা টেকসই করতে হবে। এবার আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখছি। কেউ অসুস্থ হলে যাতে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া যায়।’

আরএমএম/জেডএ/জেআইএম