ধর্ম

পাঁচ ওয়াক্তে ৫০-এর ছাওয়াব

পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলার যত মাখলুক রয়েছে, সবাই নিজ নিজ পদ্ধতিতে সিজদাবনত হয়ে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তাঁর কোনো কিছুতেই কোথাও কোনো হঠকারীতা ও অবাধ্যতা প্রদর্শন করে না। এমনকি সামান্যতম বিরক্তিও প্রকাশ করে না। সূরা নাহলের ৪৯নং আয়াতে এসেছে, `আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যত জীব-জন্তু আছে সে সমস্ত জীব ও ফিরিশতাগণও আল্লাহর সিজদা করে। তারা অহংকার করে না।` আর মানুষও নামাজ আদায় করে। মানুষের নামাজ আদায়ে আল্লাহর নির্দেশনা ও ফায়েদা জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-নামাজের নির্দেশনা-কুরআনুল কারিমে বহু জায়গায় নামাজ প্রতিষ্ঠা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ وَارْكَعُواْ مَعَ الرَّاكِعِينَ অর্থাৎ ‘আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাযে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।’হাদিসে এসেছে- হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার তার প্রশাসকদের নিকট এ মর্মে পত্র প্রেরণ করলেন যে, আমার মতে তোমাদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে নামাজ। যে ব্যক্তি নামাজের হিফাজত করল এবং যথাসময়ে নামাজ আদায় করল, সে তার  দ্বীনের হিফাজত করল। আর যে ব্যক্তি তা বরবাদ করল, সে নামাজ ছাড়া অন্য আমলকেও চরমভাবে বরবাদ করে দিলে। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, মিশকাত)পাঁচ ওয়াক্তে ৫০-এর ইঙ্গিতমিরাজের রজনীতে আল্লাহ তাআলা মানুষের ওপর দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। ঘটনাক্রমে ধারাবাহিকভাবে নামাজ পাঁচ ওয়াক্তে নির্ধারিত হয়েছে। এ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করাই উম্মাতে মুহাম্মাদির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।  হাদিসে এসেছে- হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,  মিরাজ রজনীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে শেষ পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়। এরপর বলা হয়, হে মুহাম্মদ! আমার কথায় কোনো রদবদল হয় না আপনার জন্য এ পাঁচ ওয়াক্তের ছাওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই সমান। (তিরমিজি)৫০ থেকে ৫ করার মনস্তাত্বিক ফায়েদামানুষের মনে  সদা এ কথা জাগ্রত থাকা যে, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজই মানুষের জন্য ফরজ নামাজের  প্রকৃত সংখ্যা। এর অর্থ হলো- পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার মতো যোগ্যতা, মনোবল, শক্তি ও সাহস দিয়েই আল্লাহ তাআলা বান্দাকে সৃষ্টি করেছেন। এ ধারণা ও বাসনা যার মনে জাগরুক থাকবে, তার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মোটেই কষ্ট কর হবে না। বরং সে মনে করবে তাকে তো আরো অধিক সংখ্যক নামাজের যোগ্যতা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ যদি তার নির্দেশ শিথিল না করতেন তাহলে বান্দাকে ঠিকই পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হতো। সুতরাং বান্দার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়ে পঞ্চাশ থেকে কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেন। এতে করে বান্দার মনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। আর  এ কারণেই আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সমতুল্য ঘোষণা করেছেন।পরিশেষে...আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থনা, তিনি তাঁর বান্দাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের ফায়েদা লাভের তাওফিক দান করুন। বান্দাকে ফরজ নামাজের পাশাপাশি অন্যান্য নামাজসহ তাসবিহ-তাহলিল ও নফল ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।এমএমএস/পিআর

Advertisement