নরসিংদীতে শ্বশুরবাড়ির লোকদের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে প্রায় ৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন গৃহবধূ জান্নাতি আক্তার (১৮)। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
এর আগে গত ২১ এপ্রিল (রোববার) ভোরে নরসিংদী সদর উপজেলার চরহাজীপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে থাকা অবস্থায় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়।
নিহত জান্নাতি উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের মেয়ে এবং পাশ্ববর্তী চরহাজীপুর গ্রামের হুমায়ুনের ছেলে শিপলুর স্ত্রী।
নিহত জান্নাতির দাদা মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খান জানান, গত বছরের ঈদুল আযহার দিন পাশের চরহাজীপুর গ্রামের শিপলুর সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে জান্নাতি। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তার শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে পারছিল না। তারা প্রায় সময়ই যৌতুকের টাকার জন্য তার ওপর নির্যাতন করত। নির্যাতন সইতে না পেরে একাধিকবার বাবার বাড়িতে ফিরে আসে জান্নাতি আক্তার। পরবর্তীতে আর নির্যাতন না করার শর্তে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নেয়া হয়। ফিরে যাওয়ার কিছুদিনের মাথায় আবারও নির্যাতন শুরু করে শ্বশুর-শাশুড়ি। একপর্যায়ে গত ২১ এপ্রিল ভোররাতে জান্নাতিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এসময় তার আর্তচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, পরিবারের পক্ষে অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। তবে এই মামলায় কোনো গ্রেফতারের তথ্য আমার জানা নেই।
ওই মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে বলে জানান তিনি।
সঞ্জিত সাহা/এমবিআর/পিআর
Advertisement