খেলাধুলা

গাঁয়ের ছোট মাঠ থেকে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে

প্রতিটি খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে একবারের জন্য হলেও দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা। স্বপ্নপূরণ করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় অনেককেই। সেই কাঠখড় পুড়িয়ে ভাগ্য ও পরিশ্রমের সুবাদে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছেন ২০ বছর বয়সী এক পাকিস্তানি, নাম তার শাদাব খান।

Advertisement

বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার আগে থেকেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ইমরান খানের চোখের মণি হয়ে উঠেছিলেন শাদাব খান। এছাড়া বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে তার সাথে আলাদাভাবে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। নিজ জেলার ছেলে হওয়ায় হয়তো বিশ্বকাপে এই লেগস্পিনারের প্রতি বিশেষ আশা করছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি অধিনায়ক।

বিশ্বকাপে আসার পথটা কখনোই সহজ ছিল না শাদাবের জন্য। পাকিস্তানের মিনওয়ালি থেকে উঠে এসেছেন এই লেগস্পিনার। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটকে ভালোবাসেন তিনি। তাই ক্রিকেটার হতে গিয়ে কোনো প্রস্তুতিতে ঘাটতি রাখেননি শাদাব। তার ছোটবেলার কোচ সাজ্জাদের মতে, ক্রিকেট নিয়ে শাদাবের শ্রদ্ধা অতুলনীয়।

ক্রিকেটার হওয়ার আশায় প্রতিদিন নিয়মমাফিক চলতে থাকেন শাদাব। রাত ৯টায় ঘুমিয়ে সূর্য ওঠার আগেই মাঠে চলে যেতেন তিনি। গিয়ে যতক্ষণ সম্ভব অনুশীলন করতেন এই বোলার।

Advertisement

শাদাবের বন্ধু রাজা ফালাক শেরের ভাষ্য, ‘আমার মনে আছে লাহোরের টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার সময় ম্যাচ শেষে সবাই ঘুরতে বের হয় কিন্তু শাদাব একা তার রুমে থেকে যায়। যাতে সে আগে আগে ঘুমাতে পারে এবং ক্রিকেটের প্রতি আরো মনোযোগী হতে পারে।’

যেই লেগ স্পিনের জন্য আজ বিশ্ব পরিচিত একদিন সেই লেগস্পিনটাই ছেড়ে দিয়েছিলেন শাদাব। ব্যাটিংয়ের প্রতি একটা পর্যায়ে বিশাল ভালোবাসা তৈরি হয়ে গিয়েছিল তার। কিন্তু ছোটবেলার কোচের উপদেশের কারণে ব্যাটিং ছেড়ে আবারো বোলিংয়ের প্রতি মনোযোগ দেন শাদাব।

শাদাব পাকিস্তানের হয়ে প্রথমে সুযোগ পান অনূর্ধ্ব-১৬ দলে। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেখান থেকে সরাসরি সুযোগ পান অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। ২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ১১ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের হয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হন তিনি।

পরের বছরই টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের হয়ে অভিষিক্ত হন এবং দুই বছরের মধ্যে আইসিসি বোলিং র‍্যাংকিংয়ের তিন নম্বরে চলে আসেন এ স্পিনার।

Advertisement

টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি ওয়ানডেতেও সমান পারফরম্যান্স করতে থাকেন শাদাব। ফলে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ২০১৯ বিশ্বকাপের পাকিস্তান দলে জায়গা করে নেন এই বোলার। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে ৩৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ৪৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।

জাতীয় দলের হয়ে এমন সাফল্যের পরও নিজের পেছনের পথটাকে ভুলে যাননি শাদাব। তার সাবেক কোচের ভাষ্য মতে, গ্রামের বাড়ি গেলে নিয়মিত তার পুরনো ক্লাবে যাওয়া আসা করেন তিনি। এমনকি বর্তমানে সেই ক্লাবকে চালাতে নিজের পকেট থেকে পয়সা দিচ্ছেন এই বোলার।

এএইচএস/এসএএস/এমকেএইচ