আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গতি তথ্য দিয়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নিরীক্ষকদের প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।
Advertisement
অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠায় কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদন ক্ষতিয়ে দেখে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) থেকে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। এর ভিত্তিতে কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন তদন্ত করছে আইসিএবি। তবে কপারটেকের নিরীক্ষক এ বিষয়ে অসহযোগিত করছে বলে আইসিএবি’র পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
ফলে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে নালিশ করার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গিত থাকার অভিযোগ ওঠায় এফআরসি থেকে আইসিএবিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। কিন্তু কপারটেকের নিরীক্ষক এ বিষয়ে অসহযোগিত করছে বলে আইসিএবি’র পক্ষ থকে জানানো হয়। এসব কারণেই কপারটেকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিএসইসির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে।
Advertisement
এমন পরিস্থিতিতে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ নিয়ে আইসিএবি’র তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বৈঠকে বসে। বৈঠকে কপারটেকের বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে বিষয়টি আরও ক্ষতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আইসিএবি’র সভাপতি এ এফ নেছারউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, কপারটেকের বিষয়ে আমরা এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। আমরা আরও তদন্ত করে তারপর সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গতি থাকায় কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের তালিকাভুক্তি আটকে দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে।
ডিএসইর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনে অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠায় পরিচালনা পর্ষদ সভার মাধ্যমে কোম্পানিটির ব্যালেন্স সিট অধিকতর নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
Advertisement
তদন্তে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের আর্থিক হিসাবে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক হিসাবে অসঙ্গতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যেরও সত্যতা মিলেছে। যে কারণে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ডিএসইর পর্ষদ। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বিএসইসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে ২০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। বিএসইসির অনুমোদ নিয়ে ইতোমধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের আবেদন গ্রহণ করছে। এর পরই কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে।
এদিকে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা আইন মেনেই অনুমোদন দিয়েছি। কোম্পানির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা আমরা খতিয়ে দেখব। তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেওয়া মানেই লেনদেন করার অনুমোদন দেওয়া না।
এমএএস/আরএস/এমকেএইচ