চীনের শিক্ষানগরী খ্যাত উহানের সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব। দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে বাংলাদেশসহ প্রায় ৭০টি দেশের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
Advertisement
শনিবার (২৫ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ আন্তর্জাতিক উৎসবটির পঞ্চম আসরের প্রথম পর্বে স্টল সাজিয়ে নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৬ মে) রাতে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ আয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কলেজ অব ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল এক্সচঞ্জের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও এ মিলনমেলায় অংশ নেয়া উল্লেখযোগ্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া, মিশর, কাজাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়াসহ আরও অর্ধশতাধিক দেশ।
উদ্বোধনী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জাও লিংয়ুনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠে আসরের। উৎসবের প্রথম দিনে বাংলাদেশের নানা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে স্টল সাজান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। সেন্ট্রাল চায়না ইউনিভার্সিটির চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী, চিত্রশিল্পী ইব্রাহীম মাহমুদের তৈরি করা দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার স্টলে যোগ করে ভিন্নমাত্রা। পুরো স্টলজুড়ে বাংলাদেশি নানা পোশাক, খাদ্য, সাংস্কৃতিক নিদর্শন, শিল্পপণ্যসহ নানা সামগ্রী স্থান পায় যা প্রশংসা কুড়ায় অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের।
Advertisement
এ সময় হাতে মেহেদী লাগাতে বাংলাদেশি স্টলে ভিড় করেন অন্য দেশের নারী শিক্ষার্থীরা। মেলা ঘুরে বাংলাদেশি স্টল এসে ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। এবার দর্শনার্থীদের ভোট এবং সেরা স্টল ক্যাটাগরিতে সব দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের স্টল।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে মুক্তমঞ্চে অন্য দেশে সঙ্গে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীরাও নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মঞ্চস্থ করেন। বাংলাদেশি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন ফারজানা ইয়াসমিন মুক্তা, হিমানি আরা, শিশুশিল্পী অদ্রি, প্রাপ্তি, আরিশা ও পৌরি। এছাড়াও বাংলাদেশের হয়ে চীনা সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব ইরফান ও সঞ্জয়।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যলয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক উৎসবের। এতে প্রায় ১৫টি দেশ তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মঞ্চস্থ করে। এ সময় নানা দেশের বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়ে করতালি আর উল্লাসে অনুষ্ঠানস্থল মাতিয়ে তোলেন শত শত দর্শক।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পিএচডি গবেষক হানিফ মিয়া এবং শাহীনুর রহমান, বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও পিএইডি গবেষক আবদুল্লাহ আল হাফিজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক মোবারক হোসেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক আবির মাহমুদ, চিত্রশিল্পী ও মাস্টার্স শিক্ষার্থী ইব্রাহীম মাহমুদ এবং পিএইচডি গবেষক নূর মোহাম্মদ ও আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পিএইচডি গবেষক খালিদ ইবনে হাসান।
Advertisement
আয়োজনে সহযোগীতায় ছিলেন আকিব ইরফান, রফিক, ফাহিম, সঞ্জয়, সামিউল, নূহ, আরাফ মাহমুদ আকিব ও হৃদয়।
আন্তর্জাতিক এ সাংস্কৃতিক উৎসবের প্রমোশনাল টিমে ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ফায়সাল করিম। উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার তৈরি করা একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
আবু আজাদ/এএইচ/এমএস