দেশজুড়ে

আয়কর অফিসের ৭ কর্মচারীর হরিলুট কাণ্ড

পঞ্চগড়ে চেক জালিয়াতি মামলায় আয়কর অফিসের নিরাপত্তাপ্রহরী মো. রাজেকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Advertisement

বুধবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে পঞ্চগড় উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় দুদক।

পঞ্চগড় উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৬ মে নিরাপত্তাপ্রহরী রাজেকুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

পঞ্চগড় কার্যালয়ের সহকারী কর-কমিশনার মিজ আফরোজা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় এ মামলা করেন। মামলার অপর ছয় আসামি হলেন- অফিস সহকারী মো. জালাল উদ্দিন, কম্পিউটার অপারেটর মো. ওবায়দুর রহমান, উচ্চমান সহকারী মো. ফিরোজ জামান, উচ্চমান সহকারী মো. রফিকুল ইসলাম, অফিস সহকারী মো. মাসুদ রানা এবং ঝাড়ুদার আব্দুস সাত্তার।

Advertisement

অভিযুক্তদের মধ্যে পঞ্চগড় উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত জালাল উদ্দীন ও রাজেকুল ইসলামকে ১৫ মে সামমিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকি আসামিরা বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় আয়কর বিভাগে কর্মরত আছেন। সরকারি কর্মকর্তা-কমচারীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত করছে দুদক।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী আয়কর দাতাদের পে-অর্ডার সরকারি কোষাগারে নির্ধারিত কোডে সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখায় জমা দেয়ার কথা। কিন্তু তারা পে-অর্ডার নির্ধারিত কোডে জমা না দিয়ে বিশেষ উদ্দেশ্যে পঞ্চগড় কর কার্যালয়ের চলতি হিসাব নম্বরে জমা দেন। ওই হিসাব নম্বরে সাধারণত ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য খরচের লেনদেন হয়। পরবর্তীতে তারা চেক জালিয়াতির মাধ্যমে ওই হিসাব নম্বর থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এভাবে আসামিরা একে-অন্যের সহযোগিতায় ২০১২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭৯১ টাকা আত্মসাৎ করেন। তাদের এই অপকর্মে সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখার যে কেউ জড়িত রয়েছেন বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ওসি আবু আক্কাস আহমদ বলেন, সদর থানায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার মামলার একজন আসামিকে গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করে দুদক। বুধবার সকালে দুদকের মাধ্যমে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড় কার্যালয়ের সহকারী কর-কমিশনার মিজ আফরোজা বেগম বলেন, প্রাথমিকভাবে চেক জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়। অফিসের কর্মচারীদের এমন অপকর্মে সোনালী ব্যাংকের কেউ না কেউ জড়িত আছেন। কিন্তু আমাদের প্রাথমিক তদন্তে ব্যাংক কোনোভাবে সহযোগিতা করেনি।

Advertisement

সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখার ব্যবস্থাপক একেএম মতিয়ার বলেন, এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কর কার্যালয় যে তথ্য চেয়েছে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা না থাকায় তাদের তথ্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

সফিকুল আলম/এএম/এমএস