বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিদুর্ঘটনায় নিহত ফায়ারম্যান সোহেল রানার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১২ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ এবং ফায়ার সার্ভিস কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সাত লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।
Advertisement
বুধবার ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরে এক অনুষ্ঠানে বেলা ৩টায় সোহেলের পরিবারের হাতে এ চেক তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্ত্রী এ সময় অগ্নিসেনা সোহেলের বিষয়ে বলেন, তিনি মানুষের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। সোহেলের মতো মোট ২১ অগ্নিসেনা মানুষের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। মহান আল্লাহ্তাআলা তাদের জান্নাত দান করবেন, এ দোয়া করি।
তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিস একটি উঁচুমানের বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। শুধু আগুন নয়, কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা হলে, নৌ-দুর্ঘটনা হলে ফায়ার সার্ভিস সবার আগে গিয়ে হাজির হয়। তাদের কল্যাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফায়ার সার্ভিস কল্যাণ ট্রাস্টে ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। ট্রাস্টে অন্যান্য সোর্স থেকেও টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মতো ফায়ার সার্ভিসের ট্রাস্টও শক্তিশালী হবে।
Advertisement
সোহেলের পরিবারকে চাকরি দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সোহেলের পরিবারকে কমিটমেন্ট দিয়েছি, তাদের পরিবারের উপযুক্ত কেউ থাকলে তাকে চাকরি দেয়া হবে। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক কাজ করছেন।’
অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, সোহেলের মতো সদস্যের চলে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তার পরিবারের উপযুক্ত কোনো সদস্যের চাকরির প্রক্রিয়া চলছে।
গত ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিদুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে গুরুতর আহত হন ফায়ারম্যান সোহেল রানা। প্রথমে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। ৭ এপ্রিল সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
৮ এপ্রিল দেশে আনা হয় সোহেলের মরদেহ। পরদিন ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরে সোহেল রানার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সোহেল রানার পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। সেখান থেকে সোহেল রানাকে চোখের জলে বিদায় জানান সহকর্মীরা।
Advertisement
এআর/এমএআর/এমএস