আন্তর্জাতিক

ঘূর্ণিঝড়ে মাটি সরে সন্ধান মিলল ব্রোঞ্জ যুগের জঙ্গলের

ব্রোঞ্জ যুগে বন্যায় ডুবে গিয়েছিল পুরো জঙ্গল, যা গত চার হাজার বছরের বেশি সময় ধরে মাটির নিচে চাপা ছিল। সমুদ্রের নোনা জল, বালি এবং ঘাসের চাপড়ের নিচে প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল। কিন্তু একটি মাত্র ঘূর্ণিঝড়ই সবকিছু পাল্টে দিল। ব্রোঞ্জ যুগের সেই জঙ্গলের ওপর থাকা মাটি সরে গেল।

Advertisement

দক্ষিণ-পশ্চিম ব্রিটেনের ওয়েলসে চলতি মাসে এই জঙ্গলের সন্ধান মিলেছে। গত ২২ মে সেখানে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় হ্যানা। তারপরই সমুদ্র তীরবর্তী বর্থ এবং আনিস্লাস গ্রামের মধ্যবর্তী তিন-চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ওই জঙ্গলের সন্ধান মেলে। এই জঙ্গল নিয়ে হইচই পড়ে গেছে চারদিকে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রে ইতোমধ্যেই ওই জঙ্গলের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে শিকড়-বাকড়সমেত বহু গাছের অবশিষ্ট অংশকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কোনও কোনও গাছের ওপর আবার ঘাসের আস্তরণও চোখে পড়েছে।

হঠাৎ করে সামনে আসা এই জঙ্গল নিয়ে মানুষের মধ্যেও কৌতূহল দেখা দিয়েছে। ওই জঙ্গলে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার হিড়িকও চলছে। তবে কেউ কেউ আবার এই জঙ্গলের সঙ্গে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক সভ্যতার যুগও খুঁজে পেয়েছেন।

Advertisement

তাদের কথায়, জঙ্গলের পাশাপাশি ওই এলাকায় জনবসতিও ছিল। ছিল চাষযোগ্য উর্বর জমিও। বন্যা আটকাতে চারদিকে মজবুত বাঁধও নির্মাণ করেছিলেন সেখানকার মানুষ।

জনশ্রুতি, এক মেরেডিড নামের নারী পুরোহিত কর্তব্যে অবহেলা করলে, তার তদারকির দায়িত্বে থাকা একটি কুয়োর পানি উপচে পড়ে। তাতেই সবকিছু ডুবে যায়।

ডুবে যাওয়া ওই জঙ্গলে পাইন, ওক, বার্চের মতো গাছ ছিল বলে ধারণা। সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেলে সেগুলো নোনা পানির নিচে তলিয়ে যায় বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের মেট্রো সংবাদপত্র। কিন্তু ঘাসের চাঙর এবং কাদামাটি জমা হয়ে গাছগুলো প্রকৃতিকভাবেই সংরক্ষিত হয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা যদিও জানিয়েছেন, এর আগেও ওই এলাকায় কিছু গাছের অবশিষ্ট অংশ চোখে পড়েছে। মানুষের জীবাশ্ম এবং পশুপাখিদের পায়ের ছাপও খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। তবে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে জঙ্গলের সন্ধান এই প্রথম।

Advertisement

আজও ওই এলাকা থেকে মাটির নিচে চাপা পড়ে যাওয়া গির্জার ঘণ্টা বাজতে শোনা যায় বলেও দাবি করেছেন কেউ কেউ। তবে এর কোনও তথ্যনিষ্ঠ প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

জেডএ/পিআর