দেশজুড়ে

বাবার ভাতার কার্ডের জন্য জীবন গেল প্রতিবন্ধী সন্তানের

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল-এন্নাতলী মাঠের একটি হালটে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর (২২) মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ । মঙ্গলবার দুপুরে ওই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

Advertisement

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ওই যুবক এন্নাতলী পাটওয়ারী বাড়ির আবুল বাসারের ছোট ছেলে। ওই পরিবারের চারজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। নিহতের ভাই খোরশেদ আলম, এক বোন ও বাবা আবুল বাসার জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।

নিহতের বাবা আবুল বাসার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে খুন করেছে। ২৭ মে সোমবার রাতে কাউছার হোসেন নামের এক নেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা হুমকি দেয়। তিনি আরও জানান, আমার প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য টাকা দিয়েও ভাতা পাইনি। ওই ভাতার ঘটনা নিয়ে আমার ছেলে প্রতিবাদ করেছিল। আর এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কাউছার হোসেন আমার ছেলেকে খুন করে।

এদিকে ওই ইউনিয়নের তরুণ লীগের সভাপতি কাউছার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের মহল্লার দোকানে প্রায় শতাধিক জনসম্মুখে নুরুল ইসলামের একটি ইভটিজিংয়ের ঘটনায় সালিশি বৈঠক হবার কথা ছিল। পরে নুরুল ইসলামের বাড়ির লোকজন বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেয়। নুরুল ইসলাম এলাকার আলাউদ্দিন ফরাজীর মেয়েকে ইভটিজিং করেছিল। তারপর আমি হাজীগঞ্জ বাজারে চলে আসি। রাত দেড়টায় বাসায় গিয়েছি। আমি নুরুল ইসলামের হত্যার ঘটনার সঙ্গে মোটেই জড়িত নই।

Advertisement

ভাতার কার্ডের প্রসঙ্গে কাউছার হোসেন বলেন, তারা আমার কাছে কোনো টাকা দেয়নি। আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক নেতার কাছে দিয়েছে। তবে তারা এখনও কোনো ভাতার কার্ড পায়নি ।

অথচ নিহত প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে দেখা গেছে, ওই নেতা কাউছার হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য ২৭শ টাকা দিয়েছে। তারপরও কার্ড না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিজির কাছে অভিযোগ দিয়েও সুরাহ পায়নি।

ঘটনাস্থলে সহকারী পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন, থানা পুলিশে অফিসার ইনচার্জ মো.আলমগীর হোসেন রনি ও উপ-পরিদর্শক জাফর আহমেদ,ফারুক হোসেন পরিদর্শন করেছেন।

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো.আলমগীর হোসেন রনি জানান, নিহতের মৃতদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। শরীরে কোনো জখম নেই। ধারণা করা হচ্ছে-তাকে পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে চশমা উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

ইকরাম চৌধুরী/এমএএস/জেআইএম