রাজনীতিবিদদের নিয়ে ইফতার করেছে বিএনপি। এতে প্রতিজনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩০ টাকার ইফতার। কারণ, কারাবন্দি খালেদা জিয়ার জন্য সরকার বরাদ্দ রেখেছে ৩০ টাকা মূল্যমানের ইফতার। এর সঙ্গে মিল রেখেই আজকের ইফতারে বরাদ্দ রাখে দলটি।
Advertisement
ইফতারে ছিল- দুটি খেজুর, একটি জিলাপি, একটি বেগুনি, একটি পেঁয়াজু, ছোলাবুট ভাজি, মুড়ি ও ছোট এক বোতল পানি।
রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে এ ইফতার পার্টি হয়। এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় ঐক্যজোটে, পেশাজীবী নেতাসহ দুই সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
ইফতার শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত ভরাক্রান্ত মন নিয়ে আমাদের এ আয়োজনে অংশ নিতে হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন যে, গণতন্ত্রের মা দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। তাকে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই রমজান মাসে যখন আমরা এখানে সমবেত হয়েছি, তখন তিনিও কারাগারে থেকে বন্দি অবস্থায় পিজি (মূলত বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ছোট্ট একটি কক্ষে ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছেন। তার ইফতারের জন্য সরকারের বরাদ্দ মাত্র ৩০ টাকা।’
Advertisement
‘সেজন্যই আজকে আমরা যে আয়োজন করেছি, সেই আয়োজন আমাদের সব নেতাকর্মীর মধ্যে যেন সেই অনুভূতি, বেদনাবোধ জাগে, সে কারণে আজকে আমাদের ইফতারের আয়োজনও ৩০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। আমরা আমাদের অতিথিদের কাছে অনুরোধ জানাব, আপনাদের কষ্ট হলেও আপনারা দয়া করে এটাকে স্বীকার করে নেবেন। শুধু সেই নেত্রীর প্রতি সন্মান দেখানোর জন্য।’
খালেদা জিয়াসহ আটক নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য দোয়া চান বিএনপি মহাসচিব।
ফখরুল বলেন, ‘আজকে জগদ্দল পাথরের মতো একটা জগদ্দল সরকার চেপে বসে আছে। সম্পূর্ণভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। একটা একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে, রাষ্ট্রের স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছে। আমরা একটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আসুন আমরা সবাই আল্লাহর কাছে এ থেকে মুক্তির প্রার্থনা করি।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে গণফোরামের আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, আফসারী আমিন আহমেদ, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এসএম আকবর, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।
Advertisement
২০ দলের জামায়াতে ইসলামীর ডা. শফিকুর রহমান, হামিদুর রহমান আজাদ, আবদুল হালিম, তাসনীম আহমেদ, সেলিমুদ্দিন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, খেলাফত মজলিশের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এমএম আমিনুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাপের এমএন সাওন সাদেকীন প্রমুখ ইফতারে ছিলেন।
পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক শরীফউদ্দিন ছিলেন।
বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল মান্নান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ হালিম ডোনার, ফজলুর রহমান, নাজমুল হক নান্নু, আবদুর রেজ্জাক খান, জিয়াউর রহমান খান, শাহিদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, আবদুল হাই শিকদার, খায়রুল কবির খোকন, এসএম ফজলুল হক, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মফিকুল হাসান তৃপ্তিসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা ছিলেন।
সদ্য সংসদে যোগ দেয়া এমপি উকিল আবদুস সাত্তারও ইফতারে অংশ নেন।
ইফতারের আগে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের আশু আরোগ্য কামনাসহ আটক নেতাকর্মীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন উলামা দলের আহ্বায়ক শাহ নেছারুল হক। ইফতারের আগে উলামা দলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে কোরআন তেলাওয়াত করেন।
কেএইচ/জেডএ/এমএস