রূপকল্প বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় করতে চায় সরকার। এ জন্য রফতানিতে উৎসাহী করতে উদ্যোক্তাদের ব্যাপক প্রণোদনা দেয়ার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আগামী ১ জুলাই তথা নতুন অর্থবছরে থেকে রফতানিকৃত সকল পণ্যে নগদ সহায়তা দেয়া হবে। বর্তমান ৪৫টি পণ্য রফতানির ওপর নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
Advertisement
আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটেই এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে নগদ সহায়তার নামে কোনো দুর্নীতি ও অপকৌশলের আশ্রয় নেয়া হলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবে কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল (সিএজি) ও দুর্নীতি দুমন কমিশন (দুদক)।
আরও পড়ুন> ভর্তুকিতে বরাদ্দ পদ্মা সেতুর দেড়গুণ
সূত্র জানায়, উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে মাদক ও অস্ত্র ছাড়া যে কোনো পণ্য রফতানির ওপর নগদ সহায়তা দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এক্ষেত্রে নতুন বাজারে কোনো পণ্য রফতানি সম্ভব হলে সেক্ষেত্রেও নগদ সহায়তা দেয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রফতানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে গত বছর ৩৬টি পণ্য রফতানিতে নগদ সহায়তা ও ভর্তুকি দেয়া হয়।
Advertisement
জানা গেছে, বর্তমান গরু-মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং ও রগ রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে ১০ শতাংশ হারে। শস্য ও শাক-সবজির বীজ রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি দেয়া হয় ২০ শতাংশ হারে। পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি দেয়া হয় ২০ শতাংশ।
আরও পড়ুন> সংসদের বাজেট ৩২৮ কোটি, স্পিকারের জন্য কেনা হবে নতুন গাড়ি
এছাড়া রফতানিমুখী দেশিয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে ৪ শতাংশ, বস্ত্রখাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা ৪ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের রফতানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ২ শতাংশ, নতুন পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণে ৩ শতাংশ সহায়তা দেয়া হয়।
এছাড়া সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রফতানির বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে নগদ সহায়াত দেয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছর থেকে আরও ৯টি পণ্য রফতানিতে ১০ শতাংশ হারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন> ‘যুগোপযোগী বাজেট না হলে জাতীয় সংকট তৈরি হবে’
পণ্যগুলো হলো- হিমায়িত সফটসেল কাঁকড়া, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য ও ওষুধের কাঁচামাল, সিরামিক দ্রব্য, গালভানাইজড সিট বা কয়েলস, ফটোভলটাইক মডুল, রেজার ও রেজার ব্রেডস, ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে ২০১৮-১৯ বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বুঝে ৪৪ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ চার হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার নতুন রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। ওই বছর ৪০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় হয়েছে।
এমইউএইচ/এমএসএইচ/পিআর