বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে পুনঃনিয়োগ পাওয়ায় এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
Advertisement
সোমবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রশংসা করা হয়। এতে বলা হয়, খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পুঁজিবাজাররের উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এ জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান সোমবার এক অভিনন্দন বার্তা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের হাতে তুলে দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার বিপর্যয়ের পর দেশের পুঁজিবাজার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০১১ সালের মে মাসে এম খায়রুল হোসেনকে চেয়ারম্যান করে বর্তমান কমিশন গঠন করে। খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশনের ৮ বছরে বাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় আইনগত সংস্কার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।
Advertisement
বিগত ৮ বছরে বর্তমান কমিশনের নেতৃত্বে আইনভিত্তিক ও প্রযুক্তিনির্ভর যে পুঁজিবাজার গড়ে উঠেছে তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তথা বিনিয়োগকারীসহ সব স্টেকহোল্ডারদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ বিশ্বাস করে। এ অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের ৯২৪তম বোর্ড সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন ও কমিশনারদের আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ প্রদানের প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমান কমিশনের বহুবিধ সংস্কারমূলক কাজের অংশ হিসেবে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয়। এর মধ্যে ছিল-শেয়ারবাজারে অনিয়ম চিহ্নিত করার মাধ্যমে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাজার পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান প্রক্রিয়া জোরদার করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিকমানের সার্ভেইলেন্স সফটওয়্যার স্থাপন করে বাজারের স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের বিশেষ স্কিম ঘোষণা, পুঁজিবাজারের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জনগণকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ এবং এর ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করতে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম প্রচলন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করা, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পুঁজিবাজারে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে কমিশন সময়োপযোগী বিভিন্ন মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এমন অভিমত তুলে ধরে এতে বলা হয়, এ সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভীত আগামীতে আরও শক্তিশালী হবে। বিএসইসি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে দক্ষতা ও সততার জন্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন কর্তৃক ‘এ’ ক্যাটাগরি সদস্য পদ অর্জনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। যা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বিএসইসির এ অর্জন বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রতি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
Advertisement
স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচ্যুয়ালাইজডের বিষয়ে এতে বলা হয়, ২০১০ পরবর্তী পুঁজিবাজারের পুর্নগঠন বা সংস্কারের অংশ হিসেবে ‘দ্য এক্সচেঞ্জস ডিমিউচ্যুয়ালাইজশন এ্যাক্ট-২০১৩’ এর মাধ্যমে এক্সচেঞ্জগুলো ডিমিউচ্যুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জে রূপান্তরিত হয়। যা দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। পরবর্তী সময়ে ডিমিউচ্যুয়ালাইজশন স্কিম অনুযায়ী দীর্ঘ কর্মকান্ডের পর চীনা কনসোর্টিয়াম (সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জ) ডিএসই’র কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়। এ চুক্তির ফলে ডিএসই এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে৷ এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড কৌশলগত ও কারিগরি সহায়তার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে যায়।
এসএমই বা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তালিকাভুক্তিকরণ ও লেনদেনের জন্য একটি পৃথক বোর্ড গঠন করা হয়েছে৷ সরকারি ট্রেজারি বন্ডের লেনেদেন চালু, ইটিএফ, ডেরিভেটিভসের মতো এডভান্সড প্রোডাক্ট চালুর জন্য কাজ করছে। এ ছাড়া ওটিসি মার্কেটের আধুনিকায়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এ সব কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে- বলে অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়।
এমএএস/এনডিএস/এমএস