দেশজুড়ে

রোগীকে ‘ধাক্কা দিয়ে’ বের করে দিলেন চিকিৎসক

ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দিনমজুর আ. বারেকের দুই মেয়ে ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরদিন খুব সকালেই চলে যান ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে। শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার সময় জরুরি বিভাগের টিকিট নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান দুই মেয়েকে। কিন্তু চিকিৎসক মামুন চৌধুরী রোগী না দেখে তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।

Advertisement

এরপর তারা এর বিচার দাবিতে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এমএম মাহমুদ হাসানের অফিসে গেলে সেখানে জানানো হয়, ‘স্যারে ঘুম থেকে ওঠেননি।’ উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগীরা ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সামনে যান। সেখানে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তারা চিকিৎসকের আচরণের বিষয়ে অভিযোগ করেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও প্রবীণ সাংবাদিক দুলাল সাহা ভুক্তভোগীদের সেই অভিযোগ ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করেন।

ভিডিও থেকে জানা যায়, জরুরি বিভাগে নিয়ম অনুযায়ী টিকিট কাটেন দিনমজুর আ. বারেক। এ সময় ডা. মামুন চৌধুরী রুমে রোগী দেখছিলেন। বারেক দুই মেয়ে লামিয়া ও রাবেয়াকে নিয়ে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করে টিকিট দুটি দিতেই চিকিৎসক টিকিট ২টি ছুড়ে ফেলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, নাইট জেগেছি এখন আর কোনো রোগী দেখব না। এ কথা বলেই রোগীসহ রোগীর সঙ্গে লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দরজা বন্ধ করে দেন।

এ সময় অসহায় রোগীর লোকজন হতবাক হয়ে যান। রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা প্রেসক্লাবে যাবেন বললে সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত কর্মচারীরা টিকিট ২টি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কর্মচারী ও ডাক্তারের আচরণ দেখে রোগী ও তার সঙ্গে আসা লোকজন প্রথমেই ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) এমএম মাহাম্মদ হাসানের কাছে। তিনি ঘুম থেকে ওঠেননি বলে অফিসের লোকজন জানান। এরপর ছুটে আসেন ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে। ঘটনাটি বর্ণনা করেন সাংবাদিকদের কাছে।

Advertisement

প্রবীণ ওই সাংবাদিকের এমন স্ট্যাটাস ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সোমবার (২৭ মে) ভোর পর্যন্ত পোস্টটি ৪ হাজার ৬শ শেয়ার হয়েছে, কমেন্ট পড়েছে ১১২টি, লাইক পড়েছে ১০২৫টি। অনেকেই অসহায় মানুষগুলোর প্রতি চিকিৎসকের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডা. মামুন চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, ২৩ তারিখে নাইট ডিউটি করেছিলাম। তবে সকালে কোনো রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যাবহার করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে এটা মিথ্যা অভিযোগ। এটি বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

আতিকুর রহমান/এফএ/জেআইএম

Advertisement