নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে ‘বাংলার সিংহাম’ উল্লেখ করে শহরের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বড় আকৃতির ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে জেলাজুড়ে।
Advertisement
নারায়ণগঞ্জবাসীর সৌজন্যে এই ব্যানারগুলো টাঙানো হলেও কে বা কারা এসব টাঙিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নারায়ণগঞ্জে এসপি হারুন যেসব ভূমিকা রেখেছেন নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ তার সাধুবাদ জানিয়েছেন।
শহরের চাষাঢ়া খাজা সুপার মার্কেট, চাষাঢ়া মার্ক টাওয়ার এবং খানপুরে একই রকমের ব্যানার লক্ষ্য করা গেছে। এসব ব্যানার কারা লাগালো, কখন লাগিয়েছে তা কেউই বলতে পারেনি। এছাড়া ব্যানারটিতে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে ‘বাংলার সিংহাম’ উল্লেখ করার পাশাপাশি তাকে ‘সিংহ পুরুষ’ আখ্যায়িত করে লেখা হয়েছে, ‘সিংহ পুরুষ এসপি হারুন অর রশিদ দীর্ঘজীবী হোন’।
একজন পুলিশ সুপারকে এমন খেতাব দেয়ার বিষয়ে সাধারণ মানুষ কোনো ধরনের সমালোচনা না করলেও আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ এসপিকে নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো পুলিশ সুপারের প্রশংসা করে এমন ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এর আগে নব্বইর দশকের মাঝামাঝি সময়ে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানকে ‘সিংহ পুরুষ’ সম্বোধন করে বিভিন্ন বিলবোর্ড, ব্যানার ও পোস্টার টাঙানো হয়েছিল। শামীম ওসমানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে ‘বাংলার সিংহাম’ উল্লেখ করায় ব্যানার টাঙানোর ঘটনায় নানা আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
Advertisement
সূত্রমতে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ পুলিশ সুপার হিসেবে নারায়ণগঞ্জে আসার পর অপরাধ দমন এবং সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যান। অপরাধ দমনে পরিকল্পনা মোতাবেক ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরু, সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, বর্তমান কাউন্সিলর কবীর হোসাইন, আব্দুল করিম বাবু ওরফে ডিস বাবু, মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু, দৌলত মেম্বারকে গ্রেফতার করা হয়। এরা প্রায় সকলেই প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের লোকজন হিসেবে পরিচিত।
এছাড়া পাগলা মেরি এন্ডারসনের ভাসমান রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মদ ও বিয়ারসহ অর্ধশতাধিক লোককে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে মদ ও বিয়ার সাপ্লাইয়ের দায়ে তানভীর আহম্মেদ টিটুসহ গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করা হয়। মামলায় টিটুর নাম আসায় শামীম ওসমানের অনুসারীদের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ সবকিছুই এসপি হারুনের কারিশমা হিসেবে অনেকে মনে করেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে এসেই পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানিয়েছিলেন, তিনি কোনো সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজকে ছাড় দেবেন না। সে লক্ষ্যে তিনি নারায়ণগঞ্জে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নগরীর জুয়ার আসর এবং পাগলার মেরি এন্ডারসনের বার। জুয়ার আসর ও মেরি এন্ডারসনে অভিযানের পর নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক নেতাসহ সরকারি দলের ক্যাডারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
এছাড়া পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ শুধু অভিযানই নয়, প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সন্তান সাংসদ শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও ১৬টি সুনির্দিষ্ট বিষয় চিহ্নিত করে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন, যা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।
Advertisement
শাহাদাৎ হোসেন/এফএ/জেআইএম