খেলাধুলা

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি, রুবেলের আগুনে বোলিং, কোয়ার্টারে বাংলাদেশ

অসম সমীকরণ। বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে দু’দলের জন্যই প্রয়োজন জয়। আফগানিস্তান আর স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট অর্জন করে নিয়েছে টাইগাররা। সে সঙ্গে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের ঝুলিতে পুরেছে আরও এক পয়েন্ট।

Advertisement

অ্যাডিলেইডে ইংলিশদের মুখোমুখি বাংলাদেশ। এই ম্যাচে হারলেই বিদায় নিশ্চিত। জিতলে কোয়ার্টারে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ইংল্যান্ড জিততে পারলে টিকে থাকবে তাদের সম্ভাবনা। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ইতিমধ্যেই প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দিয়ে ফেলেছে। দুটি ম্যাচ জিতে নিয়েছে। শেষ আটে পৌঁছার জন্য প্রয়োজন যে কোনো একটি বড় দলকে হারানো। বাকি আছে ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ। এমন পরিস্থিতিতে জয় স্বপ্ন দেখাও যেন অলিক কল্পনা।

কিন্তু উজ্জীবিত বাংলাদেশের সামনে যে ইংলিশরা উড়ে যাবে, সেটা কে কল্পনা করতে পেরেছিল? অ্যাডিলেইড ওভালে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় ইংলিশরা। ভাবটা ছিল, দ্রুত অলআউট করে দিয়ে ম্যাচটাও আমরা দ্রুত জিতে ফেলবো।

কিন্তু আগের বিশ্বকাপে (২০১১ সালে চট্টগ্রামে, ২ উইকেটের ব্যবধানে) ইংলিশদের হারানোর মানসিক শক্তি তো ছিলই, একই সঙ্গে ইতিমধ্যেই দুটি ম্যাচ জিতে ফেলার কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও ছিল উজ্জীবিত। সেখান থেকেই মূলতঃ আবারও ইংলিশদের হারানোর মানসিক শক্তি পেয়েছিল বাংলাদেশ।

Advertisement

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা অবশ্য মোটেও ভালো ছিল না বাংলাদেশের। ইংলিশদের পরিকল্পনামতই এগুচ্ছিল ম্যাচের ভাগ্য। ২ রান করে নিয়ে আউট হয়ে যান তামিম এবং ইমরুল- দু’জনই। ৮ রানের ২ উইকেট পড়ার পর হাল ধরেন সৌম্য সরকার এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দু’জনের ব্যাটে গড়ে ওঠে মূল্যবান ৮৬ রানের জুটি।

৫২ বলে এ সময় সৌম্য আউট হয়ে যান ৪০ রান করে। সৌম্য আউট হওয়ার পর সাকিব আল হাসান মাঠে নেমেই আউট। করেন মাত্র দুই রান। এরপরই মুশফিকুর রহীমকে নিয়ে অবিশ্বাস্য জুটি গড়ে তোলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৪১ রানের অবিস্মরণীয় জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৩৮ বলে ১০৩ রান আউট হন রিয়াদ। মুশফিকুর রহীম ৭৭ বল খেলে করলেন ৮৯ রান। এই দুটি ইনিংসের ওপর ভর করেই ইংলিশদের সামনে ২৭৫ রানে দুর্দান্ত এক লড়াকু ইনিংস গড়ে তোলে বাংলাদেশ।

জবাব দিতে নেমে ওপেনার ইয়ান বেলের সাহসী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যেতে থাকে ইংল্যান্ড। এছাড়া মঈন আলি, অ্যালেক্স হেলস কিংবা জো রুটরা মাঝারি মানের ছোট ছোট কিছু ইনিংস উপহার দিয়ে যান; কিন্তু নিয়মিত বিরতিতেই তাদের উইকেট পড়তে থাকে।

Advertisement

বাংলাদেশের তিন পেসার মাশরাফি, রুবেল আর তাসকিনের আগুনে বোলিংয়ে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছিল ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বেল ৮২ বলে ৬৩ এবং বাটলার ৫২ বলে ৬৫ রান করে ম্যাচ প্রায় বের করে নিয়ে আসছিলেন। ক্রিস ওকস ৪০ বলে করেন ৪২ রান। তিনি ছিলেন অপরাজিত।

তবে ৪৯তম ওভারে রুবেল হোসেনের সেই দুটি স্বপ্নময় ডেলিভারি বাংলাদেশকে এনে দেয় অবিস্মরণীয় এক জয়। তার দুই ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। সঙ্গে সঙ্গেই বিজয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো অ্যাডিলেড থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশ।

আইএইচএস/পিআর