পবিত্র লাইলাতুল কদর সন্ধানে রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করার বিকল্প নেই। রোজা ফরজ হওয়ার পর বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো ইতেকাফ ছাড়েননি।
Advertisement
ইতেকাফ হলো রমজানের শেষ ১০ দিন অর্থাৎ ২০ রমজান সন্ধ্যার আগেই মসজিদে কিংবা সুনির্দিষ্ট স্থানে নিজেকে আবদ্ধ রাখা কিংবা অবস্থান করা। এ ১০ দিন দুনিয়ার যাবতীয় কাজ ও পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা।
সে হিসেবে এ বছর ২০ রমজান ১৪৪০ হিজরি মোতাবেক ২৬ মে রোববার সন্ধ্যায় ইতেকাফ পালনে নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নেবে মুমিন মুসলমান। ইতেকাফ পালনে নারী-পুরুষের রয়েছে আবশ্যক করণীয় কিছু জরুরি বিষয়। আর তা হলো-
>> ২০ রমজান ইফতারের আগে ইতেকাফের নিয়তে মসজিদের সুনির্দিষ্ট স্থান বা ঘরের নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করা আবশ্যক। সে হিসেবে এ বছর ২৬ মে (রোববার) ইফতারের আগেই মসজিদে চলে যাওয়া।
Advertisement
আরও পড়ুন > নামাজ পড়বেন যেভাবে
>> ইতেকাফের স্থানে গিয়েই ১০ দিন মসজিদে অবস্থানে ইতেকাফের নিয়ত করা আবশ্যক। ১০ দিনের কমে সুন্নাত ইতেকাফ আদায় হবে না। ১০ দিনের কম হলে তা নফল ইতেকাফে পরিণত হবে।
>> যদি কেউ ১০ দিনের জন্য সুন্নাত ইতেকাফের নিয়ত করে; তবে তার জন্য ইতেকাফ আদায় করা আবশ্যক। ওজর ছাড়া তা থেকে বিরত থাকা বৈধ নয়।
>> ইতেকাফকারীর জন্য মসজিদে অবস্থানকালীন সময়ে স্ত্রী সহবাস করা হারাম। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-‘আর যতক্ষণ তোমরা ইতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর; ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মেলমেশা কর না। এটা হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমারেখা।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৭) এমনকি স্ত্রীকে চুমু খাওয়া, আলিঙ্গন করাও বৈধ নয়।
Advertisement
>> মাসনুন ইতেকাফ শুরু করার পর কোনো ব্যক্তির যদি ২/১ দিন ইতেকাফ ভঙ্গ হয় তবে ভঙ্গ হয়ে যাওয়া দিনের ইতেকাফ পরে কাজা আদায় করে নিতে হবে।
>> পারিশ্রমিকের বিনিময় বা ইফতার-সেহরির বিনিময়ে ইতেকাফ করা ও অন্য কাউকে দিয়ে ইতেকাফ করানো; কোনোটিই বৈধ নয়।
>> ইতেকাফকালীন সময়ে কুরআন তেলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল করা, দ্বীনি মাসআলা-মাসায়েল আলোচনা করা, নিজের শিক্ষা অর্জন করা এবং অন্যকে শিখানো বৈধ এবং সর্বোত্তম কাজ।
আরও পড়ুন > সালাতুত তাসবিহ যেভাবে পড়তে বলেছেন প্রিয়নবি
>> ইতেকাফকালীন সময়ে চুপচাপ থাকাকে ইবাদাত-বন্দেগি মনে করে চুপ থাকা উচিত নয়, বরং তাতে ইতেকাফ মাকরূহ হবে। তবে মুখের গোনাহ থেকে বিরত থাকতে চুপ থাকা অবশ্যই বড় ইবাদত।
>> ইতেকাফের স্থানকে ব্যবসাস্থল বানানো মাকরূহ। ওয়াজিব ইতেকাফ ফাসিদ বা বাতিল হয়ে গেলে পরবর্তীতে তা কাজা আদায় করাও ওয়াজিব।
>> ইতেকাফ নিজের কারণে ফাসিদ/বাতিল হোক অথবা হায়েজ (ঋতুস্রাব) বা নিফাসের (রক্তস্রাব) কারণে বাতিল হোক। পরবর্তীতে তা আদায় করা ওয়াজিব।
>> মহিলারা নিজেদের বাসস্থানের নির্ধারিত স্থানে কাপড় দিয়ে পর্দা টেনে ইতেকাফে বসতে পারবে। তবে সেখানে যেন কোনো গায়রে মাহরাম তথা বেগানা পুরুষ না আসে।
>> যে সব নারীদের স্বামী আছে, অবশ্যই তাদেরকে ইতেকাফের আগে স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। স্বামীর অনুমতি না থাকলে সে নারীর জন্য ইতেকাফ বৈধ নয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব পুরুষ ও নারীকে ইতেকাফ পালনে উল্লেখিত বিষয়গুলো যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস