ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকেই কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।এদিকে, নলকূপ নষ্ট থাকায় পানি সরবরাহে ব্যাঘাত আর বিছানা সংকটে মেঝেতেই গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। আর কর্তৃপক্ষ বলছেন সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।জানা গেছে, সরকারি এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে এসেও দোকান থেকে বাকিতে ওষুধ নিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় স্বজনদের। অপরদিকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ৫টি নলকূপ থাকলেও প্রায় সময় অচল আর সচল নলকূপের পানি ব্যবহারে অনুপযোগী হওয়ায় তাও আনতে হয় ক্রয় করে। ফলে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করছে তারা। আর রোগীর তুলনায় শয্যা ও চিকিৎসার সরঞ্জামাদি না থাকায় মেঝে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে স্যালাইন দিতেও ভোগান্তির যেন শেষ নেই।হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আইনুল হক, সুরাইয়া বেগম, ফারজানাসহ রোগীরা অভিযোগ করে জাগো নিউজকে বলেন, সরকার বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহের কথা বললেও সদর হাসপাতাল থেকে প্যারাসিটামল, মেট্রিল আর স্যালাইন ছাড়া কোনো ওষুধ দেয়া হয় না। বাকি ওষুধ কিনতে হয় বাইরে থেকে। আর মাটিতে নোংরা বিছানায় চিকিৎসা নিতে হয়।তারা আরো বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় মেডিসিন ডাক্তার না পাওয়ার কারণে। তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য সেবা কমিটির মিটিংয়ে অভিযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। অন্যদিকে হাসপাতালের টয়লেটগুলো সব সময় নোংরা থাকায় তা ব্যবহারে অনুপযোগী। দুর্গন্ধে আশপাশের রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এছাড়া হাসপাতালে খাবারের মানও খুব খারাপ। সময় মতো খাবার পাওয়া যায় না। ফলে বাইরে থেকে থাবার কিনে খেতে হয়।এদিকে, কর্মরত নার্সরা জাগো নিউজকে জানান, রোগীর তুলনায় জনবল না থাকায় রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেয়া সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে প্রতিনিয়িত হিমশিম খেতে হচ্ছে।এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, এ হাসপাতালে দৈনিক রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রায় ৩শ জন। শয্যা সংকটের কারণে মেঝেতেই রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে। আর নলকূপ ও ওষুধ সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে এ হাসপাতালটির যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৭ সালে ১শ শয্যায় উন্নীত হলেও ৫০ শয্যার কম জনবল দিয়েই চলছে হাসপাতালটি। এখানে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছে ঠাকুরগাঁও ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার সাত শতাধিক রোগী।রবিউল এহসান রিপন/এসএস
Advertisement