কক্সবাজারের আকাশে রোজার শুরু থেকেই রোদের প্রখরতা বেশি। দেখতে দেখতে গত হচ্ছে পবিত্র রমজানের ১৯ দিবস। আর মাত্র সপ্তাহ দেড়েক পরই ঈদুল ফিতর উদযাপন। ঈদে পরিবারের ছোট-বড় সকলের জন্য চাই নতুন জামা-প্রসাধনী। তাই ১৪-১৫ ঘণ্টার রোজায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমলেই ভিড় বাড়ছে কক্সবাজারে। আর সব ধরনের মার্কেটে ভিড় জমছে ইফতারের পর।
Advertisement
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরেরা অগ্রিম বেতন-বোনাস না পেলেও অনেকে বাড়ির ছোট-বড় সদস্যদের চাপাচাপিতে ধার-দেনা করে হলেও বাজারে পা ফেলছেন। বাজারে আসছেন প্রবাসীদের পরিবার পরিজনও। এতে জমে উঠেছে কক্সবাজারের ঈদবাজার। চলছে সকাল-দুপুর-মধ্যরাত পর্যন্ত বিকিকিনি।
তবে অনেক ব্যবসায়ী দামের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের অভিযানের পর ৫ হাজার টাকা মূল্যের শাড়ি ২২ হাজার টাকায় বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় ক্রেতারা বিশ্বাস হারিয়েছে। এরপরও দরদামে বাকবিতণ্ডায় কেনাকাটা সারছেন ক্রেতারা।
জেলা শহরের ফজল মার্কেট, কোরালরীফ প্লাজা, সমবায় সুপার মার্কেট, এ. ছালাম মার্কেট, নিউ মার্কেট, ইডেন গার্ডেন সিটি, সী-কুইন মার্কেট, আপন টাওয়ার, হাজেরা ও ফিরোজা শপিং কমপেক্স, পৌর সুপার মার্কেট, বাটা মার্কেট, ডাটা বাজার, মসজিদ মার্কেট ও হকার মার্কেটসহ একাধিক বিপণীবিতান ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানে নারী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। তাল মিলিয়ে আসছে কিশোর ও তরুণরাও। ঈদে পোশাকে মধ্যবয়সী কিংবা নব বিবাহিতা নারীরা বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের শাড়ি খুঁজলেও তরুণী ও কিশোরীদের পছন্দ থ্রি-পিচ ও ভারতীয় সিনেমা ও সিরিয়ালের চরিত্রের সঙ্গে মেলানো নামের নানা পোশাক।
Advertisement
শুধু কাপড় নয় পাল্লা দিয়ে বিক্রি বেড়েছে জুতারও। শহরের পান বাজার সড়কের বাটা, ডাটা, বাজারঘাটার জীলস্, মসজিদ মার্কেটগুলো দেশি-বিদেশি কোম্পানির নানা ডিজাইনের জুতোর পশরা সাজিয়ে রেখেছে। বেড়েছে প্রসাধন সামগ্রী বিক্রিও।
নিউ মার্কেটে শিশু ও নারীদের পণ্যের ‘স্মার্ট কালেকশনের’ মালিক শিউলী রুনা বলেন, রোজার সঙ্গে চলমান আবহাওয়া বলতে গেলে বৈরী। এরপরও বাজারে আসছেন ক্রেতারা।
মেগামার্ট শপিংমলের মালিক জহির আহমদ জানান, এবার রমজানের শুরু থেকে তীব্র দাবদাহ। এরপরও দশম রমজানের পর থেকে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। দূরের ক্রেতারা দিনে আর শহরের বাসিন্দারা রাতে ভিড় করছেন।
এদিকে চুরি-ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে বিপণীবিতানগুলোর সামনে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুকুল।
Advertisement
কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, কক্সবাজার ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতিভুক্ত অর্ধশত মার্কেটসহ উপজেলার প্রতিটি মার্কেটে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পর্যাপ্ত বলয় রয়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে মার্কেটের নিজস্ব কর্মীও।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ মার্কেটগুলোতে ইভটিজিং বেড়েছে। পাশাপশি অনেক মার্কেটের ভেতরে ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোছাইন বলেন, ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আগে থেকেই নেয়া হয়েছে। প্রতিটি মার্কেটের সামনে পর্যাপ্ত পুলিশ পাহারা বসানো রয়েছে। আগে থেকেই বলা হয়েছিল কেউ কোথাও কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হলে পুলিশকে অবহিত করতে। অভিযোগ পাওয়ার পরও ব্যবস্থা না নিলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এফএ/জেআইএম