তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে আসায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে। রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার ফলে চরখড়িবাড়ী বিজিপি ক্যাম্পের উপর দিয়ে তিস্তার বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় যেকোনো সময় বিজিপির ক্যাম্পটি বিলীন হওয়ার পাশাপাশি চরখড়িবাড়ী গ্রামের ২ সহস্রাধিক পরিবার হুমকির মুখে পড়বে। শনিবার রাতে তিস্তার ভাঙনে চরখড়িবাড়ী মৌজার কাইয়ুমের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার তিন মিটার নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় চরাখড়িবাড়ী তিন শতাধিক পরিবারে নতুন করে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তাটিতে নামে মাত্র বাঁশের পাইলিং করে। তিস্তার পানি গত বৃহস্পতিবার থেকে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে থাকায় তিস্তা ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। রাক্ষুসে তিস্তার রুদ্রমূর্তি তীরবর্তী মানুষের জন্য এখন আতঙ্ক। উজানের ঢল এলে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আবার ঢল কমলে শুরু হচ্ছে ভাঙনে তিস্তার পাড়ের লোকজন পড়েছেন মহাবিপদে। তিস্তা পাড়ের অসহায় মানুষজনের শেষ সম্বল ভিটেমাটিটুকু রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টায় ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। কিন্তু তাদের এই প্রয়াস ব্যর্থ হচ্ছে রাক্ষুসী তিস্তার ভয়ঙ্কর গ্রাসের কাছে। এক দিকে নদী ভাঙনে ভিটাবাড়ি আবাদি জমি শেষ হচ্ছে অন্য দিকে তিস্তার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা নিদারুণ কষ্টভোগ করছেন। রোববার সকালে তিস্তার পানি বিপদসীমার (৫২দশমিক ৪০) ১৩ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনের ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি, ছাতুনামা গ্রামগুলো লণ্ডভণ্ড হতে চলেছে। তিস্তা নদীর ভাঙনের এই পরিস্থিতি জানিয়ে ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এরকম বিপাকে পড়েছেন। পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আব্দুল লতিফ খান জাগো নিউজকে জানান, ছাতনাই মৌজার ১০টি বসতবাড়ির ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সেখানে আরো ১০টি বাড়ি হুমকির মুখে থাকায় পরিবারগুলো তাদের ঘর ভেঙে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। টেপাখাড়বাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়িবাড়ীর গ্রামের তিস্তা নদীর ধারে স্বপন বাঁধের সংস্কারকৃত সিডিএমপির মাটির বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধটির ৩শ মিটার তিস্তার নদীতে বিলীন হয়েছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জাগো নিউজকে বলেন, চরখড়িবাড়ীতে মাটির রাস্তাটি বিলীন হওয়ার কারণে বিজিপি ক্যাম্পটি হুমকির মুখে পড়েছে। রাস্তাটিতে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা হলেও নামে মাত্র কাজ করায় শনিবার রাতে বিলীন হয়েছে। এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে মন্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/আরআইপি
Advertisement