খেলাধুলা

‘স্বপ্ন তো দেখি অনেক বড়, সঙ্গে বাস্তবতাও মানতে হয়’

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ১৩ জন খেলোয়াড়ের নাম নিশ্চিত ছিলো অনেক আগে থেকেই। যতো জল্পনা-কল্পনা ছিলো শেষ দুটি জায়গা ঘিরেই। সে দুই জনের একজন হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন ডানহাতি অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

Advertisement

অথচ দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে মোসাদ্দেকের শুরুটা যেমন আশা জাগানিয়া ছিলো, তাতে এবারের বিশ্বকাপে অটোমেটিক চয়েজ হিসেবেই থাকার কথা ছিলো তার; কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটের স্ফুলিঙ্গ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সে অর্থে জ্বালাতে পারেননি মোসাদ্দেক, করতে পারেননি নামের প্রতি সুবিচার।

যে কারণে ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পরও কখনোই জাতীয় দলে তেমনভাবে থিতু হতে পারেননি তিনি। অথচ ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটের অভিষেক ম্যাচেই খেলেছিলেন ভালো দুইটি ইনিংস; কিন্তু এরপর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারায় বারবার জায়গা হারিয়েছেন, তবে ফিরেছেনও আবার।

ঠিক যেনো তার জীবনেরই গল্প। বাবা আবুল কাশেমের ইচ্ছে ছিলো তিন ছেলেই খেলবে জাতীয় দলে। সে লক্ষ্যে তিনজনকেই পাঠিয়ে দেন বিকেএসপিতে। ছোট দুই জমজ ভাই সান ও মুন বিকেএসপিতে সুযোগ পেলেও, বড় ছেলে সৈকত চারবারের চেষ্টায়ও পারেননি দেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজের নাম দাখিল করতে।

Advertisement

তা না পারলেই বা কি? এ কারণে যে হাল ছেড়ে দেবেন মোসাদ্দেক- তা ভাবার কারণ নেই। নিজের পরিশ্রম ও বাবার আগ্রহে ঠিকই পেয়েছেন জাতীয় দলের জার্সি। বাবা আবুল কাশেম না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেও, বাবার স্বপ্নটা সত্যি করে এবার বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলতে নামবেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই দেশের মানুষের কাছে হিরো বনে গেছেন তিনি। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল ম্যাচে মাত্র ২৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে প্রথমবারের মতো দেশকে এনে দিয়েছেন কোনো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। বিশ্বকাপেও এমন কিছু করার স্বপ্নই দেখছেন মোসাদ্দেক।

‘আসলে স্বপ্ন তো দেখি অনেক বড়; কিন্তু বাস্তবতা হলো আমাকে আগে একাদশে সুযোগ পেতে হবে। সুযোগ পেলেও নিচের দিকে যখন নামব, তখন বড় ইনিংস খেলার সম্ভাবনা থাকবে না। আমি তাই বিশ্বকাপের স্বপ্নের ইনিংসটা মনে মনে একটু অন্যভাবে সাজিয়ে রেখেছি। ধরুন, শেষ চার ওভারে ৫০ রান প্রয়োজন, এমন সময় ক্রিজে গিয়ে যদি খেলাটি জিতিয়ে আসতে পারি!’- বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে বলেছেন মোসাদ্দেক।

এসএএস/আইএইচএস/এমকেএইচ

Advertisement