একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারের ৪ মাস ৩ দিন অতিক্রান্ত হলো। ৭ মাস ৯ দিন পর ২০২০-২১ সালে বাঙালি জাতি দুই গৌরবের উৎসব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আর তাঁরই নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী উৎসব উদযাপন শুরু করবে। ৭১-এর দেশি-বিদেশি পরাজিত শত্রু পাকিস্তানি ভূত এবং কায়েমী স্বার্থবাদী লোভী-অর্থপিশাচরা ছাড়া সবাই চাইবে, অনুষ্ঠান পালন সামনে রেখে গৌরব ও মর্যাদাহানীকর, অনভিপ্রেত ও হতাশাজনক কোনো কিছু যথাসম্ভব কম রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে সংঘটিত হোক। কিন্তু এরকম অনেক কিছুই ঘটে চলছে। সুর-লয়-তাল যেন কেটে যাচ্ছে। একে একে কতক ঘটনা ঘটতে থাকায় পরিস্থিতি কেমন যেন হতাশাজনক হয়ে উঠছে।
Advertisement
পবিত্র ঈদোৎসব সামনে। কিন্তু কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। কৃষক ক্ষুব্ধ। বেশি ফলন অর্জন ও প্রশংসার; কিন্তু সেসব কিভাবে সমালোচনা ও হতাশার কাটা হয়, এটা এর প্রমাণ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় অবকাঠামো, কৃষক সংগঠন (এফএফএস), বিপণন সংগঠন, সমবায় সমিতি ও কৃষি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করা হবে।’
এইসব ব্যাপারে বিগত ১০ বছরে আর নতুন সরকার আসার পর কতটুকু কি করা হয়েছে এবং তা করা সম্ভব ছিল কি না তা নিয়ে কোনো উত্তর নেই। সর্বোপরি ফলন যে বেশি হবে, বেশি হলে দাম কমবে, গুদাম যে নাই প্রভৃতি সব আগে থেকেই বুঝে উঠতে পারার কথা। এখন যে কোথাও কোথাও সরাসরি কৃষক থেকে ধান কেনা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে বা রপ্তানির কথা শোনা যাচ্ছে তা কি আগে থেকেই পরিকল্পনার মধ্যে আনা যেতো না! অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আমদানি বন্ধ না হলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ জানা যায়, মজুদ থাকা সত্ত্বেও আমদানি হয়েছে।
যদি আগে থেকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সব ব্যবস্থাপনা করা যেতো এবং তা প্রচারের মধ্যে আনা হতো, তবে কৃষকরা এতটা সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হতো না। অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আগে পদক্ষেপ আর পরের পদক্ষেপের ফারাক আকাশ পাতাল। তবে এবারে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাকে ঘিরে সমাজে কতক ইতিবাচক ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাজনৈতিক নির্দেশ ছাড়া নানা পেশার মানুষ কৃষকদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। ধান কেটে দিচ্ছে। এই দিকটা সামাজিক জাগরণের শুভ লক্ষণ।
Advertisement
প্রসঙ্গক্রমে বলতেই হয় যে, পাটকল শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছিল না আর তাই আন্দোলনে-ধর্মঘট-মিছিলে নেমেছিল। শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য এই প্রেক্ষিতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে, বিজেএমসি-র কাছে টাকা না দিয়ে সরকার সরাসরি শ্রমিকদের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে টাকা দিবে। সংস্থাটি কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত হলে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা ভাবলে বিস্মিত হতে হয়। শ্রমিকরা এই সংস্থার বিলুপ্তি চাইছে। এসব সামাজিক জাগরণেরই লক্ষণ। মন্দের মধ্যে সামাজিক জাগরণের এই ভালো দিকটা নিয়ে অগ্রসর হওয়া এখন সময়ের দাবি।
এদিকে ‘বালিশ’ সংশ্লিষ্ট ঘটনা নিয়ে নিষ্ঠুর এক রসিকতা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আগে নেত্রকোনার ‘বালিশ’ নামক মিষ্টি হাসির খোরাক জোগাতো। এখন রূপপুরের ‘বালিশ’ তা জোগাচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা পর্যন্ত এ নিয়ে হাসছেন। বাউফলে একটি বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে ধার্য করা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। সরকারি অফিসগুলো যে দুর্নীতিতে ভাসছে, এর প্রমাণ পাওয়া যায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের কথায়। চাঁদপুরে ১৯ মে তিনি বলেছেন, ‘দুদকের অফিস বাড়ালে দুর্নীতির অভিযোগ আরো বাড়তে পারে। আমি চাই অফিস যতটা কমবে ততই ভালো।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘অর্থনীতি যত এগিয়ে যাবে, দুর্নীতি পিছু নিবে। কারণ দুর্নীতি হচ্ছে উন্নয়নের ভাই-বোন।’ দেশবাসী উন্নয়ন চায়। ভাই-বোনের ঐক্য চায় না। প্রশ্ন হলো বিধিলিপির মতো কি দুর্নীতিকে মেনে নিতে হবে। এদিকে ১৪ দলের মুখপত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘পয়সা দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, আইনজীবী, আদালতও কেনা যায়।’ কথাবার্তায় সব যেন খেলো ও গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে। এই কথা শুনে হতাশা আর ক্ষোভে মানুষ প্রশ্ন করে, রাজনীতিক, মন্ত্রী ও নেতা কি কেনা যায় না! সার্বিক বিচারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলে সরকারের অঙ্গীকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি এখন প্রশ্নের মুখোমুখি। মন্দ খবর ছড়াচ্ছে ডিজিটাল গতিতে আর সরকারি অ্যাকশন হচ্ছে এনাগল পদ্ধতিতে।
কেবল দুর্নীতির ক্ষেত্রে নয় ধর্ষণের ক্ষেত্রেও ‘জিরো টরারেন্স’ যেন নীরবে নিভৃতে কাঁদছে। বিগত চার মাসে ধর্ষণের ১৫৩৮টি মামলা হয়েছে। বিগত বছরগুলোর চাইতে তা অনেক বেশি। আর এটা তো জানাই আছে যে, সব ধর্ষণ ঘটনার মামলা হয় না। তদন্তের অগ্রগতি, গ্রেফতার, বিচার কার্যক্রম হতাশাজনক। সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক সাক্ষাৎকালে স্বীকার করেছেন, ‘সরকার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সামাজিক, পারিবারিক কিছু সংকটের কারণে ধর্ষনের ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয় না। এখানে সাক্ষী একটা বড় বিষয় তারা আদালতে আসতে চায় না।’ মূলত রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের কারণেই যে আসতে চায় না তা সুস্পষ্ট। প্রশ্নটা হলো, ‘জিরো টলারেন্স’-কে এমন দুর্দশার মধ্যে রেখেই কি আমরা ২০২০-২১ সালে গৌরবের উৎসবের পালনে পদক্ষেপ নিবো?
Advertisement
এদিকে আর্থিক খাত নিয়েও নানা সমালোচনা রয়েছে। ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথেই অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘একটা দুষ্টচক্রে আটকে আছে আর্থিক খাত, বিপর্যয় ঠেকাতে শিগগিরই এ খাতের সংস্কার প্রয়োজন।’ তিনি তাই ব্যাংক ঋণ খেলাপিদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘অনেক কঠিন হতে হবে, আত্মীয় স্বজন চিনবো না।’ ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন পরিশোধ সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ জারি করেছে। এটা জারি হওয়ার পর কমবেশি প্রচার হচ্ছে, ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থায় ঋণ খেলাপি সংস্কৃতি কমবে নাকি উৎসাহিত হবে, তা নিয়ে এখন সর্বত্রই কমবেশি বিতর্ক চলছে। খেলাপি ঋণ হচ্ছে ব্যাংকের গলার কাটা- না যায় ফেলা, না যায় গেলা। তবে ওপরের কথা ও কাজ দিয়ে এটা অনুধাবন করা যাচ্ছে, বর্তমান অর্থমন্ত্রী কঠিন কথা দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, কিন্তু নরম কাজ দিয়ে এই পর্যায়ের ইতি টানলেন।
প্রসঙ্গত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘ঋণসহ ব্যাংক জালিয়াতি কঠোর হস্তে দমন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঋণ গ্রাহক ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার এবং দেউলিয়া আইন বাস্তবায়নের টেকসই ও কার্যকর পদ্ধতি নির্ণয় করা হবে।’ এই অঙ্গীকার সামনে রেখে তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কথা অনুযায়ী কাজ হলো কি না? তবে ওই যে রাজনীতির বহুল প্রচারিত একটা কথা আছে না, এক পা অগ্রসর হওয়ার জন্য কখনোবা দুই পা পিছাতে হয়। তবে পিছানোটা আরো পিছানোর ইঙ্গিত কি না কে বলতে পারে! ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে হয় না তথা মানি ইজ নো প্রবলেম-এর এই দেশে এই ধরনের বড় ছাড় অর্থমন্ত্রী কথিত ‘দুষ্টচক্র’ ভাঙতে কিংবা ‘বিপর্যয়’ ঠেকাতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে কী? শেষ বিচারে অর্থনীতিই যেহেতু রাজনীতির গতিপথের নির্ধারক, তাই ‘দুষ্টচক্র’ ও ‘বিপর্যয়’ সামনে রেখে উৎসাহ নিয়ে উৎসবে যাওয়া কঠিন বৈ-কি!
এদিকে ইশতেহারে বা আগে কোনো কথা না থাকলেও সরকারের নেতা মন্ত্রীরা হঠাৎ করে নানা ওয়াদা করে যাচ্ছেন। যেমন মহিলাদের জন্য আলাদা বাজার প্রতিষ্ঠা করার কথা জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেছেন। এ ধরনের কথা কি অগ্র-পশ্চাৎ ভেবে বা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ও নীতি মেনে বলা হচ্ছে। প্রসঙ্গত বলতেই হয়, এবারের নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক প্রচারনা হয়নি এবং নির্বাচনের পর পরও সাম্প্রদায়িক নির্যাতন কম ছিল বিধায় সংখ্যালঘুদের মনে স্বস্তি ও আস্থা বেড়েছিল। এখন কয়েকদিন আগে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যে, বিগত চার মাসে ২৫০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ এবং সকল নাগরিকের সমর্যাদা ও অধিকার সুনিশ্চিত করার কথা আর তৃণমূলে হচ্ছে উল্টো কাজ। এসব ঘটনায় অতীতের ঐতিহ্য অনুসরণ করে সংখ্যালঘুদের পাশে আওয়ামী লীগ থাকছে বলে কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। বরং তাতে যুক্ত এমন প্রচার চলছে।
প্রসঙ্গত একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে যে, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক সমস্যা-সংকটে মানুষ ক্রমেই সক্রিয় হয়ে উঠছে। ইতোপূর্বে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার, সড়ক দুর্ঘটনা, কোটা সংস্কার এবং নির্বাচনের পর ওয়াসার পানি নিয়ে মানুষের প্রতিক্রিয়া ও সক্রিয়তা বুঝিয়ে দিয়েছে, ডিজিটাল যুগে মানুষ কিভাবে কখন রাস্তায় নামবে তা বলা কঠিন। কেবল মানুষ কেন, নিজ দলের অভ্যন্তরে বিরোধ সৃষ্টি হলে বিদ্রোহীরা কোন্ ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাও ছাত্রলীগের সম্মেলনের এক বছর পর কমিটি ঘোষণার ভেতর দিয়ে প্রমাণিত হয়।
বাস্তবে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরটা যে কি হয়ে আছে, তা ইতোপূর্বে বিভিন্ন জেলার কমিটি গঠন, সহ-সম্পাদক নির্বাচন এবং বর্তমানে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত। শত্রু ঢুকে শক্তিশালী ঘাঁটি করে বসে আছে দলের ভেতর। ছাত্র শিবির নেতা ছাত্রলীগের ধর্ম সম্পাদক পদ পেয়েছে, এটা কি কল্পনা করা যায়! প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এসব নিয়ে বলছেন, উষ্মা প্রকাশ করছেন কিন্তু কাজ কি কিছু হচ্ছে! এসবের ভেতরে দিয়ে কখন কোন ভিসুবিয়াসের উদ্গীরণ হয় কিংবা কালসাপ কোথায় কিভাবে অবস্থান নেয়, তা কে বলতে পারে! এর মধ্যে হত্যা-ক্যুয়ের রাজনীতিতে জাতি ঘর পোড়া বিধায় সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় পাচ্ছে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ভেতর ও বাহির অর্থাৎ দুই বন্ধুর সখ্যতা দিয়েই আসে!
উল্লিখিত ও অনুল্লিখিত নানা বিরূপ অবস্থায় মধ্যে দেশবাসী তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষ আসলেই জাতীয় দুই বড় উৎসবের মধ্যে যেতে ভীত ও শংকিত হয়ে আছে। সবশেষে একটি বিষয় উল্লেখ করেই এই কলামের ইতি টানছি। ক্রমেই দেখা যাচ্ছে, ব্যবস্থা গ্রহণ ও আইন প্রণয়ন যে-কোনো ইস্যুতে প্রশাসন বা সংসদ পিছিয়ে পড়ছে আর বিচার বিভাগ রায় দিচ্ছে। ১৬ মার্চের পত্রিকায় দেখলাম, মশা, বায়ুদূষণ ও যত্রতত্র জলাবদ্ধতা রোধে ঢাকার দুই কর্পোরেশনের অবহেলা প্রত্যক্ষ করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই আদালতকে এসব বিষয়ে আদেশ নির্দেশ দিতে হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো সংসদ ও প্রশাসন আসলে করছেটা কী? এভাবে সংসদ ও প্রশাসনের কর্মপরিধি সংকুচিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হতে থাকলে এর পরিণতি ভালো হবে বলে মনে হয় না।
অভিজ্ঞতা বলে, ইতিহাসে যত বড় বড় অঘটন হয়েছে, সাধারণভাবে তার বেশির ভাগ ঘটেছে, যার যা কাজ তা না করা এবং অন্যে করার ফলে। এদিকে মামলা জটের পাল্লায় পড়ে সংশ্লিষ্টরা হতাশ। আইনমন্ত্রী গত সপ্তাহেও বলছেন, ‘দ্রুত বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ।’ আসলেই দুই উৎসব অনুষ্ঠান সামনে রেখে সমস্যা-সংকট নিয়ে বড় বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে আছে দেশ আর সেই সাথে সরকার। আর সমস্যা-সংকট জনগণের মনোজগৎ পরিব্যপ্ত করে থাকায় সাফল্য ও অর্জনগুলো দেশবাসীকে উৎসাহিত করতে পারছে না। দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল মীরেসরাইতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’ গড়ে ওঠার কথা কিংবা পাটের ‘সোনালি ব্যাগ’ যে বাজারে এসেছে প্রভৃতি সব মানুষ কি সমস্যা-সংকটের ডামাডোলে জানতে পারছে!
কলামটা যখন শেষ করছি, তখন দেখলাম পত্রিকার এক কোনো পড়ে আছে এই খবর: ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহারে দেশের সব চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে।’ দেশবাসী কে কতটুকু জানে এই খবর! আর গুরুত্ব কতটুকু দেয়! দেশবাসী তো স্বপ্ন দেখে, জাতির মহামতি দুই গৌরবের উৎসব সামনে রেখে সমস্যা-সংকট সখাত সলিলে নিপতিত হোক আর উৎসাহ-উদ্দীপনা আকাশে উড়ুক। স্বপ্ন কি সত্য হবে- এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন!
লেখক : রাজনীতিক।
এইচআর/জেআইএম