মানিকগঞ্জের ঘিওরে অর্থের বিনিময়ে শিশু (১০) ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ধর্ষককে লাখ টাকা জরিমানা করে তা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
Advertisement
ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভিকটিমের পরিবারকেও তারা এলাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছিল। পরে পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ভিকটিমের পরিবারকে খুঁজে বের করে। অবশেষে এক সপ্তাহ পর ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়। মঙ্গলবার ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
মামলার বাদী শিশুটির মা জানান, তার মেয়ে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। গত ১২ মে প্রতিবেশী দুলাল ওরফে সেলু ভূইয়া (৪০) তার মেয়েকে কৌশলে ফাঁকা বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ কথা কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। পরে শিশুটি মায়ের কাছে সব ঘটনা খুলে বলে।
এ ঘটনা আপস-মীমাংসা করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী, বাকা মিয়া, বাবু মল্লিক, তোবারক হোসেনসহ স্থানীয় মাতব্বররা। তারা গোপনে বাকামিয়ার বাড়িতে গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করেন। সালিশে দুলালকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
Advertisement
স্থানীয়দের অভিযোগ, জরিমানার টাকা আদায় করে বিচারকরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী। তিনি সালিশে উপস্থিত থাকা এবং জরিমানা করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। ধর্ষণের ঘটনাও পুলিশ আসার আগে তিনি জানতেন না বলে জানান।
সরেজমিনে জানা যায়, অভিযুক্তের কাছ থেকে জরিমানার টাকা আদায় করার পর বিচারকরা ভিকটিমের পরিবারকে গ্রাম থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেন। যাতে ঘটনার বিষয়ে কেউ কিছু না জানতে পারে।
ঘিওর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, লোকমুখে ধর্ষণের ঘটনা জানার পর ভিকটিম ও তার পরিবারকে খোঁজার চেষ্টা করি। অবশেষে তাদের সন্ধান পাই এবং জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের ঘটনা জানতে পারি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে শিশুটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মঙ্গলবার জেলা সদর হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত দুলালকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণের ঘটনা আপস-মীমাংসা এবং টাকা ভাগবাটোয়ারার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ মিললে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
বি.এম খোরশেদ/আরএআর/জেআইএম