আগামী ৩০ মে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১২তম আসরের। এর আগে মাঠে গড়িয়েছে বিশ্বকাপের ১১টি আসর। বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর উপলক্ষে জাগো নিউজের অসংখ্য আয়োজনে আজ থাকছে বিশ্বকাপ নিয়ে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
Advertisement
চলুন দেখে নেয়া যাক সেগুলো:
ব্যাটিংয়ের রাজা শচিন টেন্ডুলকার
বিশ্বকাপ ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক ভারতীয় ক্রিকেট ঈশ্বর শচিন টেন্ডুলকার। রেকর্ডসংখ্যক ৬টি বিশ্বকাপ খেলে ৫৬.৯৫ গড়ে ২২৭৮ রান করেন টেন্ডুলকার; যা তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট রিকি পন্টিংয়ের চেয়ে পাঁচ শতাধিক বেশী! এমনকি এক আসরে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটিও এই ভারতীয়র দখলে। ২০০৩ বিশ্বকাপে ১১ ইনিংসে ৬৭৩ রানের রেকর্ডটি এক আসরে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ হিসেবে এখনো অটুট রয়েছে।
Advertisement
শিরোপার হ্যাটট্রিক অস্ট্রেলিয়ার
বিশ্বের একমাত্র দল হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিল অষ্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ সালে পরপর ৩ আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তিরা।এই তিন বিশ্বকাপের ফাইনালে তারা হারিয়েছিল যথাক্রমে এশিয়ার তিন দেশ পাকিস্তান, ভারত এবং শ্রীলঙ্কাকে।
ফিল্ডিংয়ের বিশ্বস্ত হাত রিকি পন্টিংয়ের
বিশ্বকাপে ২৮টি ক্যাচ নিয়ে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ক্যাচ সংগ্রাহক সাবেক অষ্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন শ্রীলংকান কিংবদন্তি সনাৎ জয়াসুরিয়া। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপে ১১টি ক্যাচ সংগ্রহ করে এক আসরে সর্বোচ্চ ক্যাচ ধরার রেকর্ডটিও নিজের করে রেখেছেন পন্টিং।
Advertisement
বোলিংয়ের সম্রাট গ্লেন ম্যাকগ্রাহ
বোলার হিসেবে প্রায় সব অর্জনই কিংবদন্তী বোলার গ্ল্যান ম্যাকগ্রাহর দখলে। ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ৪টি বিশ্বকাপের ৩৯টি ম্যাচ খেলে ৭১ উইকেট শিকার বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। এছাড়াও ২০০৭ বিশ্বকাপে ২৬টি উইকেট নিয়ে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট কিংবা ২০০৩ বিশ্বকাপে নামিবিয়ার বিপক্ষে ১৫ রানে ৭ উইকেট নিয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডও তার দখলে। শুধু তা-ই নয়, মাত্র ১৮.১৯ গড় নিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে ভাল বোলিং গড়ের মালিকও এই অষ্ট্রেলিয়ান।
গ্লাভস হাতে সবচেয়ে নিরাপদ সাঙ্গাকারা
বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী ডিসমিসালের রেকর্ড শ্রীলঙ্কান উইকেটরক্ষক কুমার সাঙ্গাকারার। চার বিশ্বকাপে মোট ৫৪টি ডিসমিসাল করে সাঙ্গাকারা রয়েছেন সবার ওপরে। তার চেয়ে মাত্র ২টি কম (৫২) ডিসমিসাল নিয়ে পরের অবস্থানেই রয়েছেন অষ্ট্রেলিয়ান সাবেক উইকেটরক্ষক অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। তবে এক আসরে ২১টি এবং এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৬টি ডিসমিসালের রেকর্ড অবশ্য গিলিরই দখলে।
গাপটিল যেখানে সবার ওপরে
পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে একাই ২৩৭! এই অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের অধিকারী নিউজিল্যান্ডের ওপেনার মার্টিন গাপটিল। ২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই মাইলফলক অর্জন করেন তিনি।
অজেয় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের রেকর্ড
বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড অষ্ট্রেলিয়ার। ১৯৯৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত ৪ বিশ্বকাপে টানা ২৭ ম্যাচ অপরাজিত ছিল অষ্ট্রেলিয়া। এমনকি ৭৫% জয় নিয়ে ম্যাচ জয়ের শতকরা হারে বিশ্বকাপের অবিসংবাদিত সেরা টিম অষ্ট্রেলিয়া।
জুটি গড়ে সবার ওপরে গেইল-স্যামুয়েলস
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল এবং মার্লন স্যামুয়েলসের দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭২ রানের পার্টনারশিপটি এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ। সে ম্যাচে বিশ্বকাপের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ২১৫ রানের ইনিংস খেলেন ক্রিস গেইল।
সেঞ্চুরির রেকর্ড সাঙ্গাকারার
এক আসরে সবচেয়ে বেশী শতকের রেকর্ডটি কুমার সাংগাকারার দখলে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে পরপর ৪ ম্যাচে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে বেশী অর্ধশতকের রেকর্ড শচিন টেন্ডুলকারের (৭টি, ২০০৩ সালে)।
বিশ্বকাপের জোড়া ডাবল সেঞ্চুরি
ক্রিকেট বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ডাবল সেঞ্চুরি হয়েছে ২টি। দ্বিশতক দুটিই এসেছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে। একটি নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিলের ব্যাট থেকে (২৩৭ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) এবং অন্যটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের (২১৫ রান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে)। সে হিসেবে বিশ্বকাপে এক ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ মার্টিন গাপটিলের।
শূন্যের রেকর্ডে শীর্ষে যিনি
সবচেয়ে বেশী ০ রানে আউট হওয়া খেলোয়াড় আরেক কিউই নাথান অ্যাস্টল। বিশ্বকাপে ২২ ম্যাচ খেলে রেকর্ড সংখ্যক ৫টি ম্যাচে কোন রান না করেই সাজঘরে ফেরেন নাথান অ্যাস্টল।
মিস্টার এক্সট্রার ফিফটি
বিশ্বকাপের এক ম্যাচে সর্বোচ্চ অতিরিক্ত রান হওয়ার রেকর্ডটি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। চেস্টার লি স্ট্রিটে স্কটল্যান্ড বনাম পাকিস্তানের সে ম্যাচটিতে অতিরিক্ত খাত থেকে এসেছিল ৫৯ রান। যার মধ্যে ছিল ৩৩টি ওয়াইড এবং ১৫ টি নো বল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অতিরিক্ত রান এসেছিল ২০০৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ে বনাম ইন্ডিয়ার ম্যাচে (৫১ রান)।
আরজে/এসএএস/এমএস