খেলাধুলা

পাকিস্তানকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের টানা ১১ সিরিজ জয়

শেষ ম্যাচেও পারল না পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রয়্যাল লন্ডন ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে গতকাল (রোববার) তারা হেরেছে ৫৪ রানে। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর সিরিজের পরের তিন ওয়ানডে ৩৪০ এর অধিক রান গড়েও হেরেছিল সরফরাজ আহমেদের দল। শেষ ওয়ানডেতে তাই সান্ত্বনার একটি জয় চেয়েছিল তারা। বিশ্বকাপের আগে যা হতে পারতো বড় টনিক। তবে জয় তো দূরের কথা এদিন ৩০০ রানের গণ্ডিও পেরোতে পারেনি তারা।

Advertisement

জিততে হলে করতে হবে ৩৫২ রান। মাথার উপর এমন পাহাড়সম লক্ষ্য নিয়ে শুরুটা দরকার ছিল দারুণ। ঠিক উল্টোটা হয়েছিল পাকিস্তানের। ৬ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। তিনটি উইকেট পকেটে পুরেন ক্রিস ওকস। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ফাখর জামানকে (০) স্লিপে ক্যাচ বানান ইংলিশ এই পেসার। পরের ওভারে এসে তিন বলের ব্যবধানে তুলে নেন আবিদ আলি (৫) আর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজকে (০)।

৬ রানের মধ্যেই শীর্ষ ৩ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে রীতিমত ধুঁকছিল পাকিস্তান। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাবর আজম ও সরফরাজ আহমেদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দলটি। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রানও তুলতে থাকেন তারা। তবে ৮০ রান করে বাবর আজম রান আউটের ফাঁদে পড়লে ফের ম্যাচের লাগাম হাতে পেয়ে যায় ইংলিশরা।

বাবর-সরফরাজের ১৪৬ রানের জুটি ভাঙে জস বাটলার ও আদিল রশিদের যৌথ প্রচেষ্টায়। এরপর একই দশা হয় সেঞ্চুরির পথে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজেরও। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক থেকে ৩ রান দূরে থাকতে জস বাটলারের সরাসরি থ্রোতে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

Advertisement

এর আগে, সাজঘরের ফেরেন শোয়েব মালিকও। ৪ রান করে রশিদকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। তবে ওই দুটি রানআউটই আসলে কাল হয়ে দাঁড়ায় সফরকারীদের জন্য। ইনিংসের শেষের দিকে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা তাই অতিমানবীয় আর কিছু করতে না পারায় ২৯৭ রানের মধ্যেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানিরা। ম্যাচ হারে ৫৪ রানের ব্যবধানে।

এ হারে টানা ১০ ম্যাচ জয়হীন রইল সরফরাজ আহমেদের দল। অন্যদিকে পাকিস্তানকে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়ে টানা ১১ সিরিজ জিতে নিল আসন্ন বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ ও হট ফেভারিটের তকমা পাওয়া থ্রি- লায়ন্সরা।

এর আগে পাকিস্তানি বোলারদের তুলোধুনো করে ৯ উইকেটে ৩৫১ রানের পাহাড়সমান সংগ্রহ গড়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বরাবরের মতো শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে থাকেন ভিন্স-বেয়ারস্টোরা। পুঁজিটা আরও বড় হতে পারতো। শেষদিকে বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে রানের গতি কিছুটা আটকে দেন পাকিস্তানি বোলাররা।

ইংল্যান্ডের প্রথম ৬ ব্যাটসম্যানের সবাই রান পেয়েছেন এবং মোটামুটি সবাই ছিলেন ভয়ংকর চেহারায়। দুই ওপেনারের মধ্যে জেমস ভিন্স ৩২ বলে ৩৩ আর জনি বেয়ারস্টো ২১ বলে ৩২ করে আউট হন।

Advertisement

দ্বিতীয় উইকেটে ১১৭ রানের বড় জুটি গড়েন জো রুট আর ইয়ন মরগান। দুজনই করেছেন হাফসেঞ্চুরি। মরগান ৬৪ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ৫ ছক্কায় ৭৬ রান করে ফিরলে ভাঙে এই জুটি।

সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন রুট। কিন্তু ৭৩ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৮৪ রানে পৌঁছার পর মোহাম্মদ হাসনাইনের শিকার হন তিনি। জস বাটলার ৩৪ বলে ৩৪ আর বেন স্টোকস ২৯ বল খেলে করেন ২১ রান।

শেষদিকে টম কুরানের ১৫ বলে হার না মানা ২৯ রানে সাড়ে তিনশো পার করে ইংল্যান্ড। ২টি করে চার ছক্কা হাঁকান কুরান।

পাকিস্তানের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৮২ রান খরচ করলেও তিনি নেন ৪টি উইকেট। ইমাদ ওয়াসিমের শিকার ৩টি।

এসএস/এমএমআর/জেআইএম