নওগাঁর পোরশায় গত একমাস থেকে পাঁচটি পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে ওই পরিবারের কোনো সদস্যকে মসজিদসহ স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যেতে দেয়া হচ্ছে না। এতে করে ওই পরিবারগুলোর প্রায় ২০/২৫ জন সদস্য অসহায় হয়ে পড়েছেন। তবে এ বিষয়ে মাতব্বররা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
Advertisement
জানা গেছে, গোরখাই গ্রামের মৃত শহিদুল ইসরামের পাঁচ ছেলে মজিবুর রহমান, আব্দুর রহমান, আইনুল ইসলাম, আব্দুর রহিম ও আব্দুল লতিফ দীর্ঘদিন থেকে একত্রে বসবাস করে আসছেন। তারা পুরইল গ্রামের ইব্রাহীম শাহ’র একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন। কিন্তু তাদের লিজ নেয়া পুকুরটির দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য গ্রামের মাতব্বর ডাবরের ছেলে সাদের ও কাদের, গফুরের ছেলে আবুল কালাম, শমসেরের ছেলে মোকছেদ ও মাহবুরের ছেলে মালেকের নেতৃত্বে কিছু লোকজন চাপ দেন। এতে তারা রাজি না হওয়ায় তাদেরকে একঘরে করা হয়।
এখানেই থেমে নেই মাতব্বররা। গ্রামের মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ওই পাঁচ ভাই ও তাদের পরিবারকে মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ করা হয়। রমজান মাসেও তারা মসজিদে নামাজ পড়তে পারছেন না। এমনকি গত একমাস থেকে তাদের ছেলে-মেয়েদের স্থানীয় মাদরাসায় পড়তে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ওই পাঁচ পরিবারে কোনো দিনমজুর যেন কাজ করতে না পারে এজন্য নিষেধ করা হয়েছে। নিষেধ না শুনলে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ক্ষতি করা হবে বলেও মাতব্বররা হুমকি দিয়েছেন। বর্তমানে ওই পরিবারগুলো তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
Advertisement
গ্রামের মসজিদের ইমাম আজাহার আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি মজিবুরকে মসজিদে নামাজ পড়তে দেখেছেন। কিন্তু তাদের ছেলে মেয়েরা মাদরাসায় আসে না বলে জানান ইমাম।
ভুক্তভোগী মজিবুর রহমান জানান, গত একমাস থেকে খুব কষ্ট করে তারা দিন পার করছেন। মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধসহ ছেলে মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া দিনমজুরকেও আমাদের বাড়িতে কাজ করেত নিষেধ করা হয়েছে। ওই মাতব্বররা আমাদের বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে আসছেন।
পোরশা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমুল হামিদ রেজা বলেন, তিনি বিষয়টি অবগত আছেন। বিষয়টি সুরহার জন্য দু’পক্ষকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
আব্বাস আলী/এফএ/পিআর