প্রবাস

বাদল ফরাজির মুক্তির দাবিতে জার্মানিতে মানববন্ধন

প্রায় এক দশক ধরে বিনা অপরাধে প্রথমে ভারতে এবং পরে নিজ দেশ বাংলাদেশে অন্যায়ভাবে কারাগারে জীবন কাটাচ্ছেন বাদল ফরাজি। তার মুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার (১৪ মে) জার্মানির বনে অবস্থিত জাতিসংঘ দফতরের সামনে মানববন্ধন করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

Advertisement

মানববন্ধন থেকে বাদল ফরাজির মুক্তির ব্যাপারে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হয়।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বন থেকে প্রকাশিত জার্মান ও বাংলা ভাষায় প্রকাশিত সাময়িকী ‘সীমান্ত’ এর সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, অনলাইন গণমাধ্যম সংস্থা ‘আওয়ার ভয়েস’ এর বিজ্ঞান সম্পাদক মো. খুরশীদ হাসান সজীব, সাংবাদিক হোসাইন আব্দুল হাই, আজিম সরকার, মাহফুজা আক্তার রুবি, মিঠুন প্রনব, ইয়াসমিন তামান্না প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বাগেরহাটের আবদুল খালেক ফরাজি ও সারাফালি বেগমের ছেলে বাদল। টি এ ফারুক স্কুলের অষ্টম শ্রেণি পাস বাদলের ইচ্ছা ছিল তাজমহল দেখার। এমন ইচ্ছায় ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই দুপুরে বেনাপোল অভিবাসন কার্যালয়ে সব প্রক্রিয়া শেষ করে ভারতের হরিদাসপুর সীমান্তে প্রবেশের পরই সেখানকার একটি খুনের অপরাধে বাদলকে আটক করে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। হিন্দি বা ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে না পারার কারণে বিএসএফের কর্মকর্তাদের তিনি বোঝাতেই পারেননি যে খুনের অভিযোগ যে বাদলকে খোঁজা হচ্ছে তিনি সেই ব্যক্তি নন।

Advertisement

২০০৮ সালের ৬ মে দিল্লির অমর কলোনিতে এক বৃদ্ধাকে খুনের অভিযোগে বাদল সিং নামে এক ব্যক্তিকে খুঁজছিল ভারতীয় পুলিশ। তাকে ধরতে সীমান্তেও সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। দু’জনের নাম এক হওয়ায় বাংলাদেশি নাগরিক বাদল ফরাজিকে আটক করে বিএসএফ।

পরে ওই খুনের অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয় বাদলের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট বাদলকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির সাকেট আদালত বাদলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। দিল্লি হাইকোর্টও নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। পরে বাদল ফরাজির স্থান হয় দিল্লির তিহার জেলে।

বিনা দোষে এই সাজা মেনে না নিয়ে বাদল ফরাজি দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তায় সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। পরে শীর্ষ আদালতও বাদলের আবেদন খারিজ করে দেন। ফলে গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে জেলেই কাটাতে হয়েছে বাদলকে।

গত বছরের ৬ জুলাই বিকেলে জেট এয়ারের একটি ফ্লাইটে বাদলকে নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান দেশের প্রতিনিধি দল। এরপর প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে তাকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।

Advertisement

এমবিআর/জেআইএম