ভারতে সপ্তম তথা শেষ দফার ভোটের আগে শনিবার তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বিজেপিকে ঠেকাতে মহাজোট গঠন, নির্বাচন কমিশনের ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং ইভিএম কারচুপির আশঙ্কা নিয়ে মূলত মতবিনিময় করেছেন তারা।
Advertisement
পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মমতা সরব হওয়ার পরেই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন অন্য বিরোধী নেতারাও। গতকাল বিকেলে মমতা বন্দোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের সততা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইসিকে কড়া চিঠি দিয়েছেন।
তাছাড়া ভোটগ্রহণ শেষ হলেই বিরোধীদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। তাই বিরোধী শিবিরের নেতারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। সম্প্রতি মায়াবতীর সঙ্গেও কথা হয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। ধারণা করা হচ্ছে বিজেপিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বে মহাজোট হতে পারে।
ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির প্রস্তুতিতে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। এদিন চন্দ্রবাবু আরও একদফা দেখা করেন রাহুলের সঙ্গে। বৈঠক করেন অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতীর সঙ্গেও। সিপিআই নেতা সুধাকর রেড্ডি ও ডি রাজার সঙ্গেও এদিন কথা বলেন তিনি।
Advertisement
আরও পড়ুন>> মন্দিরের গুহায় ধ্যানে বসেছেন মোদি
অন্যদিকে রাহুলও শুক্রবার তার সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, মমতা, মায়াবতী, মুয়ায়ম সিংহ যাদব, চন্দ্রবাবুর মতো বিরোধী নেতারা কোনোভাবেই নরেন্দ্র মোদিকে সরকার গড়তে সাহায্য করবেন না বলে তার বিশ্বাস।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বা উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধীদের জোট না হলেও সেখানে ভোটে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিরই জয় হবে। যার অর্থ রাহুল এই রাজ্যে তৃণমূল এবং উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী-অখিলেশের জোটের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।
মমতার সঙ্গে শনিবার দুপুরে রাহুলের ফোনে আলোচনা হয়। ইভিএমে কারচুপি হতে পারে বলে অভিযোগ এর আগেও বিরোধীরা তুলেছেন। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির পক্ষে কাজ করার অভিযোগও তুলেছেন মমতাসহ একাধিক বিরোধীনেতা।
Advertisement
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিয়েও অসন্তুষ্ট বিরোধী শিবির। মমতা-রাহুল ফোনালাপে এ নিয়ে কথা বলেন। আজকের ভোটে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে বিরোধীরা সম্মিলিতভাবে তার মোকাবিলা করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট শুরু হয়েছে রোববার সকালে। দেশটিতে আজ সাতটি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৫৯টি লোকসভা আসনের ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করবেন। আজ ভাগ্য নির্ধারণ হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।
আজকের শেষ দফায় পঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের সব লোকসভা আসনের পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দেশটির সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হবে সন্ধ্যায়। দিল্লির ক্ষমতায় এবার কারা বসবে তার জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে আরও তিনদিন। কেননা ভোট গণনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে আগামী ২৩ মে বৃহস্পতিবার।
সূত্র: আনন্দবাজার
এসএ/জেআইএম