ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কবে থেকে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে সেই ঘোষণা আসেনি এখনও। কিন্তু এর আগেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে।
Advertisement
অগ্রিম টিকিট বিক্রি নিয়ে শনিবার মালিকদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। তবে লঞ্চ মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে রোববার (১৯ মে) সদরঘাটে ঈদ ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সভা হবে। সেখানেই লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রির তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. সহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া শনিবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, ‘লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট দেয়া শুরু হয়ে গেছে। আমাদের (লঞ্চ মালিক) একটি মিটিং হওয়ার কথা ছিল, মিটিংটি হয়নি। কারণ, সব মালিক ব্যস্ত রয়েছেন। আমরা যারা পারছি টিকিট দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে (১৮ মে) থেকে অগ্রিম টিকিট দেয়া শুরু করেছি। যে পর্যন্ত টিকিট থাকবে, বিক্রিও চলবে।’
Advertisement
সদরঘাটে কাউন্টার ও লঞ্চে যোগাযোগ করে অগ্রিম টিকিট নেয়া যাচ্ছে বলে জানান সহিদুল ইসলাম।
ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর কালাইয়া রুটে চলাচলকারী বন্ধন-৫ লঞ্চের কর্মী কামাল হোসেন জানান, ঈদের সময় কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন তারা। সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার ও ডাবল কেবিল ২ হাজার টাকা রাখা হচ্ছে।
ঢাকা নদীবন্দরের (সদরঘাট) যুগ্ম-পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) আলমগীর কবির জাগো নিউজকে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) চেয়ারম্যানের (কমডোর এম মাহবুব-উল ইসলাম) সভাপতিত্বে লঞ্চ মালিক, পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে রোববার সদরঘাটে সভা হবে। সেখানে ঈদ ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে অগ্রিম টিকিট বিক্রি তারিখও নির্ধারণ করে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ২০ মে থেকে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সুপারিশ করব। সভায় অনুমোদন পেলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।’
Advertisement
বিআইডব্লিউটিএ’র একজন কর্মকর্তা না প্রকাশ না করে বলেন, ঈদের সময় লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়টি শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যাচ্ছে না। চাহিদা বেশি থাকায় মালিকরা ঘোষণার আগেই কেবিনের টিকিট বিক্রি করে দেন। এতে কিছু লোক টিকিট পেয়ে যান। আবার কিছু লোক ঘোষণার অপেক্ষায় থেকে শেষ মুহূর্তে কেবিনের টিকিট পান না। পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের ফিরতে ভোগান্তিতে পড়েন তারা।
তিনি আরও জানান, সদরঘাটে কাউন্টার থাকলেও সেখানে টিকিট বিক্রিতে আগ্রহ নেই লঞ্চ মালিকদের। মূলত লঞ্চের ম্যানেজারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে অগ্রিম টিকিট কিনে নেন যাত্রীরা। কারণ, যারা নদীপথে নিয়মিত চলাচল করেন তাদের লঞ্চের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে।
ঈদের আগে ৩-৪ দিন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ লোক সদরঘাট দিয়ে নদীপথে গ্রামের বাড়িতে যায় বলে জানান যুগ্ম-পরিচালক আলমগীর কবির।
চাহিদা থাকা সাপেক্ষে ৩০ মে সদরঘাট থেকে স্পেশাল লঞ্চ চলাচল শুরু হবে জানিয়ে যুগ্ম-পরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে ২১৫টি লঞ্চ আছে। সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪৩টি রুটে লঞ্চ চলাচল করে। প্রতিদিন ৮০টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়, আবার বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ৮০টি লঞ্চ সদরঘাটে আসে। বাকি ৫৫টি লঞ্চ দিয়ে আমরা স্পেশাল সার্ভিস পরিচালনা করব। স্পেশাল সার্ভিসে কয়টি লঞ্চ আমরা ব্যবহার করব তা যাত্রীদের চাপের ওপর নির্ভর করছে।’
অপরদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান প্রণয় কান্তি বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের সময় সদরঘাট থেকে বিআইডব্লিউটিসির পাঁচটি জাহাজ চলাচল করবে। আমাদের অগ্রিম টিকিট বলে সেরকম কিছু নেই। যে কোনো সময় যে কেউ এলে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি মূলত বেসরকারি খাতই নিয়ন্ত্রণ করে।’
আরএমএম/জেডএ/জেআইএম