কলার আঁতুড় ঘর খ্যাত কুষ্টিয়া এবং ঝিনাইদহ জেলা। দুই জেলাসহ পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর মিলে চার জেলায় উৎপন্ন হয় দেশের সর্বমোট চাহিদার এক তৃতীয়াংশ কলা। তাই বলে দাম কম নয় এ অঞ্চলে। রমজানে প্রতি হালি কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।
Advertisement
স্থানীয় বিক্রেতারা বলেন, ‘রমজানে সরবারহ কম থাকায় এবং অতিরিক্ত চাহিদার কারণে অধিকাংশ কলাই পাইকারি হাটে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে চড়া দামে। সেগুলো ট্রাকে করে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলে এলাকায় পাকা কলার দাম যে কোন বছরের তুলনায় অনেক বেশি।’
শেখপাড়া বাজারে কলা কিনতে আসা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘রমজানের আগে কলার হালি ছিল ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা। কিন্তু রোজা শুরু হতেই একলাফে ৪০-৫০ টাকা হয়ে গেছে। অথচ প্রচুর কলা উৎপন্ন হয় এখানে।’
আরও পড়ুন > অনাবাদী জমিতে আমলকি চাষে সফল আব্দুল হাই
Advertisement
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ কলার বাজার কুষ্টিয়া জেলার মধুপুরে। খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা এ বাজার বসছে গত ২৫ বছর ধরে। সূর্য ওঠার সাথে সাথে কুষ্টিয়াসহ পাশের জেলাগুলো থেকে এখানে ভ্যানে করে কলা আসতে থাকে। বেলা ১২টার মধ্যেই ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা কলা কেনা শেষে ট্রাকে লোড করা শুরু করে।
মধুপুর বাজারের আবদুস সাত্তার জানান, প্রতিদিন ৭০-১০০ ট্রাক কলা কেনা-বেচা হয় এখানে। তবে এবারে রমজানের শুরু থেকেই দাম খুব চড়া। প্রতি কাদি কলা বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ১২শ’ টাকা।’
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার বসন্তপুর গ্রামের কলা চাষি মতিন বলেন, ‘কলার দাম বেশি হওয়ায় পাইকারি বাজারে আমরা কলা বিক্রি করছি। এতে এলাকার মানুষ কলা পাচ্ছে না। পাড়ার দোকান থেকে শুরু করে বাজারে অনেক বেশি দামে কলা বিক্রি হচ্ছে। এবার কলার দাম নিয়ে চাষিরা অনেক খুশি।’
আরও পড়ুন > যেভাবে রেড লেডি পেঁপে চাষ করবেন
Advertisement
মধুপুর বাজারে চট্টগ্রাম থেকে কলা কিনতে আসা নিজাম নামের এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, এবারের রমজানের শুরু থেকে তেমন কোন ফল নেই বাজারে। তাই কলার চাহিদা অনেক বেশি। ফলে বেশি দাম দিয়ে হলেও ব্যবসার খাতিরে কিনতে হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার মধুপুর ছাড়াও ঝিনাইদ জেলার বাস টার্মিনালের উত্তর পাশে বসে বিশাল কলার হাট। এছাড়াও জেলার শৈলকূপা উপজেলা শহরেও কলার হাট রয়েছে। এসব হাট থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক কলা চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অথচ এ এলাকার মানুষ কলা কিনছে চড়া দামে।
ঝিনাইদহ শহরের বাসিন্দা আলী আজগর বলেন, ‘আমরা নিজ দেশে বৈরাগী। রাস্তার দুই ধারে মাঠের পর মাঠ শুধু কলা। অথচ বাজারে কিনতে গেলে কলা নাই, দাম বেশি। আগে তো নিজেদের চাহিদা মেটাতে হবে, তারপর না হয় অন্য জেলায় যাবে। কিন্তু কোন নিয়ম-নীতি নাই। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এসইউ/জেআইএম