রেমন রেইফারের করা ২৩তম ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের করা কভার ড্রাইভ বাউন্ডারি ছোঁয়ার আগেই জয়োৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ শিবিরে। হবেই না কেন? আগের ওভারেই ৩ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২৫ রান তুলে ম্যাচ যে প্রায় জিতেই নিয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
Advertisement
তাই তো মাহমুদউল্লাহর ‘উইনিং শট’-এর আগেই জেতার উল্লাস শুরু করে দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তবে সে উইনিং শটের মাহাত্ম্য আবার অন্যরকম। কারণ মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসা সেই চারের মারেই যে ৯ বছর ও ৬ ফাইনালের আক্ষেপ ঘুচিয়ে, শিরোপা খরা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টে।
এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের মনে ছিল রাজ্যের অনিশ্চয়তা। কাটবে কি আগের ছয় ফাইনাল হারের হতাশা? না-কি সাত নম্বরে এসেও ফিরতে হবে খালি হাতেই?- এমন প্রশ্ন মাথায় রেখে সবার চোখ ছিল দূর দেশে খেলতে নামা টাইগারদের দিকে। যারা সপ্তম ফাইনালে এসে ঠিকই দেশবাসীকে ভাসিয়েছে শিরোপা জয়ের আনন্দে।
এ আনন্দ বাংলাদেশ দলের জন্য বয়ে এসেছে বাড়তি স্বস্তিও। তাই তো ম্যাচ শেষে মাশরাফির কণ্ঠে শোনা গেল, প্রথম ছয়বার ব্যর্থ হয়ে সপ্তমবারে শিরোপা জেতার তৃপ্তি। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে টাইগার অধিনায়ক বলেন, 'আমরা আগের ছয়বার ফাইনাল খেলেও পারিনি। অবশেষে এবার পারলাম। অবশ্যই দারুণ অনুভূতি, বেশ ভালো লাগছে। দলের সবাই অনেক খুশি।'
Advertisement
এসময় এ জয়কে পুরোপুরি টিমওয়ার্ক হিসেবে ব্যাখ্যা করেন মাশরাফি। মাত্র ২৪ ওভারে ২১০ রান তাড়া করতে যেমনটা শুরুর দরকার ছিল, উদ্বোধনী জুটিতে ঠিক সেটাই এনে দেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার এবং তামিম ইকবাল। মাঝের ওভারে রানের গতি ঠিক রাখেন মুশফিকুর রহীম এবং শেষভাগে ঝড় তুলে ম্যাচ জেতান মোসাদ্দেক সৈকত।
এদের সবাইকে কৃতিত্ব দিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, 'আজকের এ জয়টা পুরোপুরি টিমওয়ার্ক। শুরুতে দারুণ জুটি গড়েছিল তামিম এবং সৌম্য। যেমন দরকার ছিল তেমন ব্যাটিং করলো সৌম্য। মাঝে মুশফিক রানের চাকা সচল রেখেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে আউট হলেও মোসাদ্দেক এবং মাহমুদউল্লাহ দুর্দান্ত ফিনিশিং দিয়েছে। সত্যিই দারুণ দলীয় পারফরম্যান্স।'
শেষের আগে মাশরাফি এও জানিয়ে দেন, এবার মাত্র শিরোপা খরা কাটল টাইগারদের। অদূর ভবিষ্যতেই (ওয়ানডে বিশ্বকাপে) এ শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন পথে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ।
মাশরাফির ভাষ্যে, 'অধিনায়ক হিসেবে আমি বলব- এটাই আমাদের নতুন পথের যাত্রা শুরু। এতদিন ধরে বারবার থেমে যেতে হয়েছিল ফাইনালে। আজকে শেষ করলাম শিরোপা জিতে। আশা করি এটা চলমান থাকবে।'
Advertisement
এসএএস/আইএইচএস/এমবিআর