‘বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ- সাকিব আল হাসান।’ ভক্তরা এভাবেই চেনে কিংবা চিহ্নিত করে থাকেন সাকিব আল হাসানকে।
Advertisement
সাকিবকে সত্যিকারার্থেই বাংলাদেশ দলের নিউক্লিয়াস বলা চলে। তিনি না থাকা মানে বলতে গেলে শক্তি অর্ধেকই কমে যাওয়া। এমন একজন অলরাউন্ডার বিশ্বের যে কোনো দলেই যিনি জায়গা করে নিতে পারেন অনায়াসে। বাংলাদেশ সেদিক থেকে ভিষণ ভাগ্যবান। সর্বকালের সেরা দল করলেও সাকিবকে বাদ দিয়ে সেটা করা যাবে না, মোটা দাগে এমন কথা লিখে দেয়াই যায়।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তো এমনি এমনি হননি। নিজেকে এই জায়গায় নিয়ে আসতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে সাকিবকে। এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির প্রথম এবং একমাত্র সদস্য নির্বাচিত হয়ে সাকিব প্রমাণ করেছেন, তিনি শুধু বাংলাদেশেরই নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা।
এই সাকিবকে নিয়ে একটি কথা প্রচলিত, অনুশীলন করেন আর না করেন, মাঠে তার থেকে শতভাগ পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই।
Advertisement
তিন ফরমেটেই দেশসেরা অলরাউন্ডার। ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং-সাকিবের কাছে আসলে দলের চাওয়া থাকে তিন ডিপার্টমেন্টেই। ওয়ানডে বিশ্বকাপ যেহেতু, তার ওয়ানডে পরিসংখ্যানটার দিকেই একবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক।
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ পর্যন্ত দেশের হয়ে ১৯৮টি ওয়ানডে খেলেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে ৩৫.৭৩ গড়ে করেছেন ৫৭১৭ রান। সেঞ্চুরি ৭টি, হাফসেঞ্চুরি ৪২টি।
বল হাতেও তার দুর্দান্ত রেকর্ড। ওয়ানডেতে উইকেট নিয়েছেন ২৪৯টি। ইকোনমি রেট মাত্র ৪.৪৪। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন একবার, ৮ বার নিয়েছেন ৪ উইকেট।
আয়ারল্যান্ডে খেলতে গিয়েও দুর্দান্ত সাকিব। গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হাসেঞ্চুরি করে ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত খেলেছেন তিনটি ম্যাচ। যার প্রথমটিতে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) করেছেন অপরাজিত ৬১ রান। ৩৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট।
Advertisement
পরের ম্যাচে করেন ২৯ রান এবং ২৭ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো উইকেট না হলেও ব্যাট হাতে ৫০ রান করার পর ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। যে কারণে ফাইনালে খেলতে পারেননি তিনি।
বিশ্বকাপের আগে আইপিএল খেলতে গিয়েছিলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে, সেখানে খেলার তেমন একটা সুযোগ পাননি। তবে দেশ বিদেশের তারকাদের মাঝে নিজেকেও ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন সাকিব, অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে করেছেন আরও একটু সমৃদ্ধ।
সবমিলিয়ে প্রস্তুতি যেমনই হোক, বিশ্বকাপে সাফল্যের পথে হাঁটতে এই সাকিবের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি চোখ। কারণ, বিশ্বকাপে তিনিই হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশের হয়ে রিয়েল গেম চেঞ্জার। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যদি মাঠে আস্থার প্রতিদানটা দিতে পারেন, তবে হাসিমুখেই দেশে ফিরতে পারবে টাইগাররা।
আইএইচএস/পিআর