নদীবন্দর ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে একসময়ের দ্বিতীয় কলকাতা খ্যাত ঝালকাঠিতে রয়েছে বিভিন্ন কারখানা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান। মৌসুমী ব্যবসা হিসেবে রয়েছে ৬টি সেমাই কারখানাও।
Advertisement
ঈদে জেলাবাসীর সেমাইয়ের চাহিদা পূরণের জন্য এসব কারখানায় সেমাই তৈরিতে চলছে ব্যস্ততা। গত এপ্রিল থেকে উৎপাদন কাজ শুরু হয়ে এখন প্রায় শেষপর্যায়ে। কারখানার মালিকরা সেমাই সরবরাহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দূরত্ব অনুযায়ী ভ্যান, টমটম, মাহিন্দ্র, অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানে লোড করে পাঠানো হচ্ছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাজারে।
মক্কা সেমাই, মদিনা সেমাই, জেদ্দা সেমাই, মিনারসহ মোট ৬টি কারখানায় লাচ্ছা ও শলা সেমাই তৈরি করা হচ্ছে।
ঝালকাঠি পশ্চিম চাঁদকাঠিতে মক্কা সেমাই কারখানার মালিক আইউব আলী খান জানান, আমার সেমাই কারখানায় উৎপাদন করা হয় লাচ্ছা ও শলা সেমাই। কোনো রকম কেমিক্যাল বা রং ছাড়াই প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয় সেমাই। পরিবেশও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে।
Advertisement
কারণ হিসেবে তিনি জানান, আমাদের এখানে প্রশাসন, গোয়েন্দা, সাংবাদিক ও ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা আসেন। কোনোরকম অসংগতি পেলে মোটা অংকের জরিমানা দিতে দিতেই কারখানার ব্যবসাসহ পুঁজিতেও ঘাটতি পড়বে। এ জন্য উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে অল্প ব্যবসায় স্বাস্থ্যসম্মত সেমাই তৈরি করা হয়।
অভিযোগ করে তিনি জানান, অনেকে বাসাবাড়িতে একটি চুল্লি বানিয়ে ঈদে ফায়দা লোটার জন্য খোলা সেমাই তৈরি করেন। রং মিশ্রণের ফলে নজরকাড়া হয়ে ওঠে, যা একদমই মানহীন এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তারা আমাদের মান ক্ষুণ্ন করে বদনাম ছড়িয়ে চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে।
সেমাই তৈরির কারিগর মো. দুলাল হোসেন জানান, ভোলা থেকে ২ মাসের জন্য ঝালকাঠিতে কাজে এসেছি। আমরা ১৫জন শ্রমিক কাজ করছি। আমাদের কারও কোনো সংক্রামক ব্যাধি নেই। কোনো রং, ক্যামিকেল ছাড়াই শুধু ময়দা আর পানি দিয়ে শলা সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। শলা সেমাই কাঁচা থাকা অবস্থায় তেলে ভেজে লাচ্ছা সেমাই তৈরি করা হয়।
কারখানা ম্যানেজার সবুজ খান জানান, আমাদের সেমাই ঝালকাঠি শহর ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বাজারে সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা পিরোজপুরের কাউখালী, ভান্ডারিয়া, বরগুনার বামনা, বরিশালের উজিরপুর, বানারিপাড়া ও ভোলার মোকামে বিক্রি করা হয়।
Advertisement
ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা জানান, ঝালকাঠির সেমাই কারখানাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য উৎপাদিত কারখানাগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। প্রয়োজনানুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে।
মো. আতিকুর রহমান/জেডএ/পিআর