রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাতে হাঁটতে গিয়ে ভিড়ের কারণে প্রত্যেকেই যেন হাঁপিয়ে উঠছেন। তবে থেমে নেই, সবাই ছুটছেন পছন্দের পোশাকের সন্ধানে। মার্কেটগুলোতে রয়েছে ক্রেতাদের ভিড়।
Advertisement
ভিড়ের কারণে ক্রেতার সঙ্গে বেশিক্ষণ কথা বলারও সুযোগ পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। এর মধ্যেই পছন্দের কাপড় কিনছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার (১৭ মে) ১১ রমজানে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় এ চিত্র দেখা যায়।
দোকানি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজান শুরুর পর আজ দ্বিতীয় শুক্রবার। প্রতি রমজানে সাধারণত এ সময় থেকেই ঈদের কেনাকাটা পুরোদমে শুরু হয়। এখন থেকে দিন যত যাবে, ভিড় তত বাড়তে থাকবে। এখন যতটুকু দাম-দর করে কাপড় কেনার সুযোগ থাকছে, পরে সে সুযোগও থাকবে না।
Advertisement
ঈদের বাকি প্রায় ২০ দিনের মতো। ঈদের আগ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে গেলে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে অনেকেই এখনই কেনাকাটা সেরে ফেলছেন। এমন একজন রাজধানীর বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মো. আশিক। শুক্রবার ঈদের কেনাকাটা করতে স্ত্রীকে নিয়ে নিউ মার্কেটে আসেন।
আশিক বলেন, ‘আজই সব কেনাকাটা শেষ করব। ঈদে গ্রামের যাব। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সবার জন্যই কেনাকাটা করবো।’
ঈদের বাকি এখনও বেশকিছু দিন, এখনই আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকেই বেটার (ভালো) মনে হয়েছে। পরে তো ভিড় হবে।’
পরিবারের সবার নতুন পোশাক কেনা অনেকের পক্ষে একদিনে সম্ভব হয় না। এ জন্য একাধিক দিন মার্কেটে আসতে হয়। এ ক্ষেত্রে অনেকেই ছুটির দিন বেছে নেন। এ পন্থা অবলম্বন করেছেন রাজধানীর মুগদার বাসিন্দা জি এম আলী। তিনি গত বৃহস্পতিবার ঈদ বাজার করেছেন। শুক্রবারও বাকি কেনাকাটা করতে নিউ মার্কেটে এসেছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ছেলে-মেয়ে, ভাগ্নে-ভাগ্নি ও নিজের জন্য কেনাকাটা করেছি। আজ মা, স্ত্রী, শাশুড়ি ও শেলকের জন্য কেনাকাটা করবো। মনে হচ্ছে না আজও সব হবে। আবার একদিন আসতে হতে পারে।’
নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, মেয়েদের পোশাকের দোকানে তুলনামূলক ভিড় বেশি। তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেই বলে দিচ্ছেন, ব্যস্ততার কারণে কথা বলার মতো সময় নেই।
তবে ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকলেও দোকানিদের দাবি বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে ভালো না। গাউছিয়া মার্কেটের অনুপম শাড়ি ঘরের সেলস ম্যানেজার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার বেচাকেনা খারাপ। মার্কেটে মানুষ আসছে, কিন্তু বেচাকেনা কম। কিনতে আসছেন একজন, কিন্তু সঙ্গে চার-পাঁচজন করে আসছেন।’
এদিকে নিউ মার্কেটের চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে ক্রেতাদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম দেখা গেছে। এ মার্কেটের এক দোকান মালিক এম কে আজাদ জানান, শুধু চন্দ্রিমা নয়, চাঁদনি চকের মতো মার্কেটেও এবার বেচাকেনা কম। মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করছে। যার প্রভাব পড়েছে মার্কেটে।
চন্দ্রিমা মার্কেটের আরেক দোকান আর এম ফ্যাশন। এ দোকানে ছোটদের পোশাক বিক্রি হয়। দোকানের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বেচাকেনার কথা আর কইয়েন না। গত বছর ঈদে প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার টাকা বিক্রি করছি। এ বছর পাঁচ-সাত হাজার টাকার বেশি বিক্রি করতে পারিনি। জানি না কেন এমন হচ্ছে। গরমের কারণেও হতে পারে।’
অপরদিকে, নিউ মার্কেট ফুটপাতে চলছে হরদম বেচাকেনা। ফুটপাত বিক্রেতারা জানান, বৃহস্পতি ও শুক্রবার থেকে মূলত ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বেচাকেনা মোটামুটি ভালো।
পিডি/এএইচ/এমএস