জাতীয়

জলাবদ্ধতা ও যানজটের সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয়

রাজধানীর জলাবদ্ধতা ও যানজটসহ সব সমস্যার সমাধান রাতারাতি করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।নগরের জলাবদ্ধতা, যানজটসহ চলমান সব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মেয়রের পদক্ষেপ এবং অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের আনিসুল হক বলেন, জলাবদ্ধতা ও যানজটসহ সব সমস্যা সমাধানে আলাদিনের চেরাগের মতো কোনো সলিউশন নেই। নগর সমস্যা সমাধানে আমি যেসব প্রতিশ্রুতি করেছি সবগুলোতেই হাত দিয়েছি। কিন্তু এটি রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব হবে না। রাজধানীর জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র বলেন, ঢাকা শহরের বৃষ্টির পানি খাল-নালা দিয়ে নদীতে যাবে। কিন্তু, রাজধানীতে তো আর খাল নেই। খালের উপর বাড়ি, মার্কেট উঠেছে। এটা ভরাট হয়ে প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। পানি তাহলে কোথায় যাবে, কিভাবে যাবে? আর এ খাল খনন ও দখলমুক্ত করার দায়িত্ব কার? সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতা নেই। এ দায়িত্ব ওয়াসার। এরপরেও আমি চেষ্টা করছি এসব জায়গায় কাজ করতে। কিন্তু এ সমস্যা সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।আনিসুল হক বলেন, মিরপুরের কালশিতে একটি খাল পরিষ্কার করেছি। কিন্তু সেদিন গিয়ে দেখি বাজারের ময়লা-বজ্র্য ফেলায় কয়েকদিনেই তা ভরাট হয়ে গেছে। আর এতো জবর দখল! আজ সকালে মিরপুরের একটি এলাকায় দেখি যেখানে দখলমুক্ত করেছিলাম, সেখানে ১০টা দোকান উঠেছে। প্রভাবশালী মহল খালের উপর বিল্ডিং-মার্কেট তুলে রেখেছেন। তবে আগামী বর্ষা মৌসুমে বর্তমান অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হবে বলে আশ্বাস দেন মেয়র।ঢাকার যানজট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেখানে ঢাকায় দেড় লাখ গাড়ি থাকার কথা সেখানে গাড়ি চলছে ১১ লাখ। যানজট হওয়াটা স্বাভাবিক।কিছু উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ঢাকার মহাখালী ও আমিনবাজারে যেখানে সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তাদের বলেছি দুই লেন বন্ধ করে গাড়ি রাখা যাবে না।ফুটপাত হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা দেখবেন ফার্মগেইট এলাকায় হকার নেই। অন্য এলাকায় আছে। কারণ এখানে অনেক ইন্টারেস্ট আছে। ইচ্ছে করলে পুলিশ দিয়ে একদিনের মধ্যে হকার উচ্ছেদ করতে পারি। কিন্তু, তাদের তো পরিবার আছে, না খেয়ে থাকবে। ফলে শহরে চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাবে। সহনশীলতার সঙ্গে আস্তে আস্তে এ কাজটি করতে চাচ্ছি।আনিসুল হক বলেন, আমার তো ইচ্ছে হয় ফুটপাতগুলো সিঙ্গাপুরের মত ফুল দিয়ে ঢেকে দেই। ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এ নিয়ে কাজও করেছি। আগামী তিন বছরের মধ্যে আমার প্রতিশ্রুত গ্রিন ঢাকা দেখতে পাবেন।রাজধানীতে বিলবোর্ড নিয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ঢাকায় একেবারেই বিলবোর্ড থাকবে না তা আমি মনে করি না। কারণ এটা একটা শিল্প। এখানে অনেক মানুষের কর্ম রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এ ব্যাপারে একটি কমিটি করে দিয়েছি। তারা বিলবোর্ডের জন্য একটি পলিসি ঠিক করবেন। এর ফলে বিলবোর্ড স্থাপনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে মনে করি।রাজধানীতে সুষ্ঠু বজ্র্য ব্যবস্থাপনা নেই স্বীকার করে আনিসুল হক বলেন, ৫ লাখ মানুষের বসবাস যোগ্য ঢাকায় ২ কোটি মানুষের বসবাস। এখানে বজ্র্য ফেলার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। এমনকি মেয়রের (নিজের) বাসার সামনেও বজ্র্য ফেলা হয়।তিনি বলেন, বর্জ্য নিয়ে ফেলার জায়গা পায় না কর্মীরা। তাই মানুষের বাড়ির সামনে বর্জ্য ফেলে। আমি ৭০টি জায়গা চিহ্নিত করেছি। এরমধ্যে ১৪টি ডিএনসিসির, বাকিগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের। একটি বর্জ্য স্টেশন করার জন্য আমি পাঁচ কাঠা জায়গা চেয়েছি, কাজও শুরু হয়ে গেছে।আনিসুল হক আরও বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৬০ থেকে ৭২টি এমন বর্জ্য স্টেশন করবো। জানুয়ারি থেকে আশাকরি ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বর্জ্য দেখতে পাবেন না।ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইসি কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।এসআই/একে/পিআর

Advertisement