পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে দুই শতাংশ এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিষয়ে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
এ লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী করতে যাচ্ছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আগামী কমিশন সভায় এ সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিএসইসিতে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রের তথ্য মতে, কমিশন সভায় সংশোধনী অনুমোদনের পর নোটিফিকেশন জারি করা হবে। আর এই নোটিফিকেশন জারি হওয়ার পর এ সংক্রান্ত আগের যতো নোটিফিকেশন আছে তা রহিত হয়ে যাবে।
Advertisement
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, সংশোধনী নোটিফিকেশন জারির পর দুই শতাংশের কম শেয়ার থাকা পরিচালকদের পদ শূন্য হয়ে যাবে। এই শূন্য পদ কোম্পানিকে ১৫ দিনের মধ্যে পূরণ করতে হবে। এছাড়া যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশের কম শেয়ার আছে, সে কোম্পানিগুলোকে আলাদা ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে।
সূত্র বলছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ২ সিসি এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এর ক্ষমতা বলে এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেবে।
সংশোধনী নোটিফিকেশনে যা থাকতে পারে-
১. স্বতন্ত্র পরিচালক বাদে সব উদ্যোক্তা ও পরিচালকের সম্মিলিতভাবে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণ করতে হবে।
Advertisement
২. যদি কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে এই শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়, তবে স্টক এক্সচেঞ্জ ওই কোম্পানিকে একটি আলাদা ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করবে।
৩. আর এই কারণে ওই কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা কোনো রকম শেয়ার বিক্রি, স্থানান্তর, হস্তান্তর, কোম্পানি একীভূতকরণ করতে পারবে না। তবে ঋণখেলাপি ও মৃত্যুজনিত শেয়ার স্থানান্তরের বিষয়টি এর বাইরে থাকবে।
৪. ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কোম্পানি রাইট অফার, আরপিও, বোনাস শেয়ার, কোম্পানি অ্যামালগামেশনসহ কোনো প্রকারে মূলধন উত্তোলন করতে পারবে না।
৫. যদি কোনো উদ্যোক্তা পরিচালক এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়; তাহলে তার পরিচালক পদ তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল হবে। তবে কোম্পানি বা ইনস্টিটিউশনের মনোনিত পরিচালকের ক্ষেত্রে নূন্যতম ২ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। অর্থাৎ তিনজন মনোনীত পরিচালকের জন্য ৬ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে।
৬. যদি কোনো পরিচালক এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয় তাহলে এই শূন্য পদ পূরণ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে করতে হবে। এই কাজটি সম্পন্ন করবে ওই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বা কোম্পানির বোর্ড।
সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ২ শতাংশ এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিষয়ে সংশোধনী আনার বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে এখনও কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, যদি কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয় তবে স্টক এক্সচেঞ্জ ওই কোম্পানিকে একটি আলাদা ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানি একীভূতকরণের বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আছে।
এমএএস/এমবিআর/পিআর