আন্তর্জাতিক

যন্ত্রণায় কাতর হিন্দু নারীকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটল মুসলিম যুবক

সম্প্রীতির এ এক অনন্য নজির। ধর্মীয় কিংবা সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ ভুলে যন্ত্রণায় কাতর এক নারী ও তার অনাগত সন্তানের জন্য এক মুসলিম যুবকের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক হিন্দু নারীকে যখন হাসপাতালে নেয়ার জন্য কেউ এগিয়ে এলেন না, তখন তাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলেন ওই যুবক।

Advertisement

এ ঘটনায় ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছেন তিনি। ভারতের আসাম প্রদেশের হাইলাকান্দিতে কারফিউ জারি রয়েছে। সম্প্রতি মসজিদে নামাজ চলাকালীন পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠে আসাম। এ ঘটনায় একজনের প্রাণহানি ও ১৫ জন আহত হয়।

আরও পড়ুন : রোজার দিনে হোটেলে খাওয়ার অভিযোগে আটক ৮০

পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই এলাকায় কারফিউ জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। এই অবস্থাতেই রোববার প্রসব বেদনা ওঠে হাইলাকান্দির রাজেশ্বরপুর গ্রামের নন্দিতা দাস নামের এক নারীর। কারফিউ জারি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই কোনো যানবাহন বা অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা ছিল না। সাহায্যের জন্য ফোন করলেও কেউ তাকে হাসপাতালে নেয়ার সাহস দেখাননি।

Advertisement

প্রসব যন্ত্রণায় কাতর নন্দিতা চিন্তায় ভেঙে পড়েন। স্বামী রুবন দাস সাহায্য চেয়েও কারো কাছে পাননি। রাজেশ্বরপুর গ্রাম থেকে হাইলাকান্দি শহরের সিভিল হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। ফলে অনেকেই তাকে হাসপাতালে নিতে এগিয়ে আসেননি। এমন শোচনীয় অবস্থায় দেবদূতের মতো তার পাশে এসে দাঁড়ান প্রতিবেশী মকবুল হুসেন।

আরও পড়ুন : রমজানে যৌন আবেদনময়ী পোশাক পরায় ৩৯ নারীকে চপেটাঘাত

নন্দিতার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে তড়িঘড়ি একটি অটোরিক্সা ডেকে দম্পতিকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হন তিনি।

ভারতীয় একটি দৈনিককে মকবুল বলেন, ফাঁকা রাস্তা ছিল। যতটা সম্ভব দ্রুত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম অটোচালককে। আমার ভয় হচ্ছিল, হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হয়ে যায় কিনা। তবে এই পরিস্থিতিতে তাদের চিন্তা করতে নিষেধ করেছিলাম।

Advertisement

হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। সদ্যোজাতের নাম রেখেছেন শান্তি। জেলার ডেপুটি কমিশনার কেথি জাল্লি মকবুলের কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এমন কাজ বরাবরই অনুপ্রেরণার। হিন্দু-মুসলিমের এমন দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ আরও দরকার।

এসআইএস/এমকেএইচ