ধর্ম

রমজানে যে সময় নিশ্চিত দোয়া কবুল হয়

রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের মাস রমজান। এ মাস আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নেয়ার মাস। যে যত বেশি চাইতে পারে, আল্লাহ তাআলা তাকে তত বেশি দান করেন।

Advertisement

রমজান মাসে আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ লাভের অতি মূল্যবান দুটি সময় আছে। যে সময় আল্লাহর কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ বান্দাকে ফেরত দেন না। রমজানে এ সময়টিতে দোয়া করে কাঙ্খিত জিনিস লাভের সুর্বণ সুযোগ গ্রহণ করতে পারে রোজাদার।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কোন সময়ের দোয়া মহান আল্লাহ বেশি গ্রহণ করেন। জবাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন-‘রাতের দুই তৃতীয়াংশ শেষের দোয়া অর্থাৎ রাতের দুই ভাগ অতিক্রম করার পর যে দোয়া করা হয়।’

সে হিসেবে একটি সময় হলো->> ফজরের আগেপ্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষিত রাতের দুই তৃতীয়াংশের পরের সময় এটি। এ সময় দোয়া কবুলের জন্য বিশেষ সময়। এ সময়টি আল্লাহ তাদের চাহিদা পূরণের আশ্বাস দিয়ে ডাকতে থাকেন-- ‘কে আমাকে ডাকবে? যার ডাকে আমি সাড়া দেবো।’

Advertisement

এ মুহূর্তে যে আল্লাহকে কোনে কিছু পাওয়ার জন্য ডাকবে এবং আহ্বান করবে আল্লাহ তাআলা তাকে চাহিদা মোতাবেক দান করবেন-- ‘কে আমার কাছে কিছু চাইবে? যা আমি তাকে দান করবো।’

আল্লাহ বান্দার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন-- ‘কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো।’

সুতরাং ফজরের আগের (রাতের দুই তৃতীয়াংশের পরের) সময়টি আল্লাহর কাছে-- অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ;- মর্যাদা ও সম্মানের এবং- বিশেষ সময়।

এ সময়টিতে ‘আল্লাহ তাআলা সব সময় প্রথম আসমানে আসেন এবং বান্দাকে তাদের চাহিদা পূরণের আশ্বাস দিয়ে ডাকতে থাকেন। যারা এ সময়টিতে আল্লাহর কাছে কাঙ্খিত জিনিস চায়, আল্লাহ তাআলা তাদের ডাকে সাড়া দেন এবং কাঙ্খিত জিনিস দান করন।

Advertisement

মনে রাখবেনবিশেষ করে রমজানের শেষ রাতের কোনো আবেদন আল্লাহ অগ্রাহ্য করেন না। বান্দা যা চায় তাই কবুল করে নেন। তাই রমজানের শেষ রাতের গুরুত্ব অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।

সাহরি গ্রহণশেষ রাতের দোয়ার পরপরই রোজার জন্য সাহরি গ্রহণ করা জরুরি। কারণ দিনভর রোজা রেখে কুরআন তেলাওয়াত, নামাজ পড়া এবং রোজগারের জন্য শক্তি সঞ্চার করতে সাহরি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও কল্যাণের। আর যারা সাহরি গ্রহণ করে ফেরেশতারা তার কল্যাণ ও মাগফেরাতে দোয়া করতে থাকেন।

দ্বিতীয় সময়টি হলো->> একেবারে মাগরিবের আগেইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে বান্দা রোজায় ক্লান্ত, পিপাষার্ত ও ক্ষুধার্থ থাকে। এ সময়টিতে ইফতার সামনে নিয়ে আল্লাহর কাছে বান্দার যে কোনো প্রার্থনাই কবুল হয়ে যায়।

এ সময় মানুষ দুর্বল থাকে। মানুষের হৃদয় নরম থাকে। আল্লাহর ভয় ও মহব্বতে হৃদয় ভরপুর থাকে। ভয় ও ভালোবাসায় হৃদয় থেকে আল্লাহর কাছে যে কোনো প্রার্থনাই কবুল হয়ে যায়।

এ সময়টিতে বান্দা আল্লাহর হুকুম পালনে প্রচণ্ড ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় খাবার সামনে থাকা সত্ত্বে খাওয়া থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের অপেক্ষা করতে থাকে। সে সময়টি আল্লাহর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং তা দোয়া কবুলের গুরুত্বপূর্ণ সময়।

মুসলিম ভাই-বোনদের কর্তব্যদোয়া কবুলের এ দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দুটি সময় অবহেলায় ত্যাগ না করা। শেষ রাত তাওবা-ইসতেগফারে অতিবাহিত করা এবং সাহরি খাওয়া।

আর ইফতারের আগের মুহূর্তটিতে ইফতারি ও রান্না-বান্নাসহ অফিসিয়াল কাজ শেষ করে কিছু মুহূর্ত তাওবা-ইসতেগফারের সঙ্গে ইফতারের অপেক্ষা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত দুটি সময়ে তার কাছে কাঙ্খিত জিনিস লাভের আবেদন করার তাওফিক দান করুন। রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম