অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির শিকার বাংলাদেশিদের পাচারের সঙ্গে জড়িত হোতাসহ পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
Advertisement
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে একথা জানান তিনি।
জীবিত উদ্ধার হওয়া ১৪ বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এসব দালালদের খোঁজ পেয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে সন্দেহভাজন ওই মানবপাচারকারীদের নাম পরিচয় প্রকাশ করেননি মন্ত্রী।
এছাড়া বৃহত্তর সিলেট থেকে যারা গেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরাও বেশ কিছু দালালকে চিহ্নিত করেছেন বলে জানান ড. মোমেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘‘জানা গেছে, এই চক্রের হোতা নোয়াখালীর তিন ভাই। এছাড়া মাদারীপুরের আরও দুইজন আছে। তদের বিষয়ে আমরা বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিচ্ছি।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১৩০ জন ব্যক্তি ওই দিন দুটি নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এতে ১০০ জন ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। এর মধ্যে একটি নৌকা নিরাপদে পৌঁছে যায়। ৭০-৮০ জনকে বহনকারী নৌকাটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
ড. মোমেন জানান, ওই ঘটনায় যে চারটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি। এছাড়া উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশিদের মধ্যে ৩৯ জন এখনও নিখোঁজ। যে বাংলাদেশির লাশ পাওয়া গেছে তিনি হলেন শরীয়তপুরের নড়িয়ার উত্তম কুমার দাস। তিনি গৌতম দাসের ছেলে। ছবি পাঠিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে উত্তম কুমারের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তিউনিসিয়ায় যেসব বাংলাদেশি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেছেন তারা জানিয়েছেন, উদ্ধার করা ১৪ জনের মধ্যে চারজন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে দুজনের শরীরের বড় অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। কারণ, তারা তেলের ড্রাম ধরে ভূমধ্যসাগরে সাত থেকে আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন। অন্য দুজন আঘাতের কারণে আহত হয়েছেন। বাকি ১০ জন তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টের আশ্রয়শিবিরে রয়েছেন।
Advertisement
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের এসব নাগরিক চার থেকে পাঁচ মাস আগে লিবিয়া গেছেন। দুবাই, শারজা, আলেকজান্দ্রিয়া হয়ে ত্রিপোলিতে পৌঁছান তারা। ত্রিপোলিতে পৌঁছার পর মানবপাচারকারীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করে বাংলাদেশের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত।
জেপি/জেএইচ/এমকেএইচ