আন্তর্জাতিক

বাজারে কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ ঝরে

দিন বদল হচ্ছে। মানুষ বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কতকিছু যে করছে তার ইয়ত্তা নেই। শহুরে মানুষের অনেকেই বার্গার খায়। যা মাংস দিয়ে তৈরি। এবার বাজারে আসছে কৃত্রিম মাংস দিয়ে তৈরি বার্গার। যা থেকে আসল মাংসের মতোই ‘রক্ত’ পড়বে চুয়ে চুয়ে।

Advertisement

সম্প্রতি বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ‘মিট-ফ্রি’ খাবার সহজলভ্য হয়ে ওঠায় বিশেষজ্ঞরা এমন কথাই বলছেন। মানুষের খাদ্য কিভাবে পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে- তা নিয়ে একদিকে যেমন উদ্বেগ বাড়ছে, অন্যদিকে নিরামিষভোজী হবার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

নিরামিষভোজীরা যেসব খাবার খান সেগুলোকে বলা হয় ভেগান ফুড। বিভিন্ন মাংসজাত খাবারের ভেগান সংস্করণ বের হতে যাচ্ছে এখন। তাদেরই একটি ধরণ হলো, ভেগান সসেজ-রোল বা ভেগান বার্গার।

ভেগান বার্গারে যে মাংস ব্যবহার করা হবে তা দেখতে একদম আসল মাংসের মতোই। এসব ‘নিরামিষ মাংসের’ গন্ধ আর স্বাদও হবে আসল মাংসের মতো। তাছড়া আরেকটি বড় ব্যাপার হলো এসব মাংস থেকে আসল মাংসের মতো ‘রক্ত’ ঝরবে।

Advertisement

আরও পড়ুন> ৪২ হাজার বছর আগে মৃত ঘোড়া থেকে বের হচ্ছে তাজা রক্ত

কৃত্রিম এই মাংসগুলো তৈরি হচ্ছে উদ্ভিদজাত প্রোটিন থেকে। সাধারণত এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে গম, মটরশুঁটি বা আলু। আর এই মাংসের ভেতর থেকে যে ‘রক্ত’ বের হবে সেসব তৈরি হচ্ছে বীটের রস দিয়ে।

গরুর মাংসের রঙ এবং স্বাদ তৈরি হয় যে প্রাণীজ উপাদানটি থেকে তার নাম হচ্ছে হেম। ইম্পসিবল ফুডস নামের একটি আমেরিকান ফার্ম সম্প্রতি উদ্ভিজ্জ হেম তৈরি করেছে। যা কৃত্রিম মাংসকে আসলের চেহারা এনে দেবে বলেই মনে করছে তারা।

বিজ্ঞানীরা এখন ল্যাবরেটরিতেও কৃত্রিম মাংস তৈরি করছেন। এসব মাংস তৈরি হচ্ছে প্রাণীর স্টেম সেল দিয়ে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন স্তরের কৃত্রিম মাংস তৈরি করা যা রান্না করা কিংবা খাওয়ার অভিজ্ঞতা হবে একেবারেই আসল মাংসের মতো। মানুষের পক্ষে এর পার্থক্য বোঝা প্রায় অসম্ভব হবে।

Advertisement

পাশ্চাত্যের কিছু সুপার স্টোরে এখন একটা মাংস মুক্ত শাখাও দেখা যাচ্ছে। তবে কৃত্রিম মাংস দিয়ে তৈরি খাদ্য পণ্য এখনো বাজারে বা রেস্তোরাঁয় না এলেও কয়েক বছরের মধ্যেই তা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাস্ট নামে একটি ফার্ম বলছে, ২০১৯ সাল শেষ হবার আগেই তারা যুক্তরাষ্ট্রের সুপার স্টোরগুলোর ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা চিকেন বা মুরগির মাংস আনতে পারবে বলে তারা আশা করছে। অবশ্য এ জন্য আমেরিকার ফুড এ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমতি লাগবে।

তাছাড়া সে অনুমতি পাওয়া গেলেও ল্যাবরেটরিতে তৈরি মাংস সম্পর্কে মানুষের যে বিরূপ ধারণা বা ছি ছি করে ওঠার প্রবণতা সেটাকেও একটা বড় বাধা হয়ে উঠবে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

এসএ/পিআর