বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ২০০ মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলে অনিয়মের ছয় অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন সুযোগ বঞ্চিত চিকিৎসকরা।
Advertisement
নিয়োগ পরীক্ষার ফল বাতিল ও ভিসি অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবিতে আজ (সোমবার) তার কার্যালয় ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাক্তার এ বি এম আব্দুল হান্নানের কাছে এসব অসঙ্গতি তুলে ধরে চিঠি দেওয়া হয়।
বিএসএমএমইউ মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সাধারণ চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বিএসএমএমইউ কর্তৃক মেডিকেল অফিসার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বারবার বিভিন্নভাবে সময়ক্ষেপণ করা হয় এবং অবশেষে গত ২২ মার্চ প্রশ্নবিদ্ধ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত পরীক্ষা এবং তার পরবর্তী কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে যে ছয়টি অসঙ্গতি উল্লেখ করা হয় তা হলো-
Advertisement
১. পরীক্ষার পূর্বেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ওঠে এবং যার ভিত্তিতে সাধারণ পরীক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্তের আশ্বাস দেন। কিন্তু কোনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার আগেই (ছয় মাস পূর্বে তৈরিকৃত বিতর্কিত প্রশ্নপত্রে) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার তারিখ ২২ মার্চ হলেও তার চারদিন আগে ১৮ মার্চ কোনো এক বিশেষ পক্ষ প্রশ্নপত্র খোলে।
২. পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইলসহ অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে উত্তরপত্র সরবরাহ করার ঘটনা ঘটে অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে উত্তরপত্র সরবরাহ করার ঘটনা ঘটে।
৩. নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ছিল ৩২ বছর। কিন্তু এর ঊর্ধ্ব বয়সের একাধিক নিয়োগ প্রার্থীর আবেদন ও বৈধ প্রার্থী তালিকায় রাখা হয় এবং তাদেরকে অবৈধভাবে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।
৪. পরীক্ষা কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষে মেডিকেলের প্রশ্নপত্রের ডেন্টালের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য যে মেডিকেল ও ডেন্টালে প্রশ্নপত্র ভিন্ন ছিল এ বিষয়ে ইতোমধ্যে সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ বরাবর প্রদান করা হয়েছে।
Advertisement
৫. বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কোন ফলাফল প্রকাশিত না হওয়া সত্ত্বেও অনেকের কাছে মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার রোল নম্বরসহ একটি তালিকা অনুলিপি পাওয়া গেছে। যেটা নিয়ে সবার মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
৬. কথিত তালিকায় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সন্তান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মেয়ের জামাতাসহ অনেকেই প্রথম সারিতে রয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, উপরে উল্লেখিত বিষয়সমূহ এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়াই ফলাফল প্রকাশ চিকিৎসকদের সাথে প্রহসনমাত্র। সুতরাং এই প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল পূর্বক সুষ্ঠু পরীক্ষা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি। একই সঙ্গে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করছি।
এমইউ/আরএস/পিআর