ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে চাঁদপুরে ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এই ঘূর্ণিঝড়ে জেলার ৫টি উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন ও মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসহ অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
Advertisement
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের ৮ দিন অতিবাহিত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহীনরা এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। অবশ্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা তাদের ঘর নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বরে ঘূর্ণিঝড়ে সম্পন্ন বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় একশ বসতঘর। এছাড়া বহু রান্নাঘর, ঘোয়ালঘর, কাচারিঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শত শত গাছপালা উপড়ে গেছে। বিদ্যুতের লাইন ও খুঁটিগুলো ভেঙে গেছে। এক কথায়, সবই যেন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ক্ষতিগ্রস্তরা নিজস্ব অর্থায়নে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
একই অবস্থ মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও স্থানীয় ইউপি সদস্যরা জানান, ফণীর আঘাতে ৮৭টি চৌচালা বসতঘর, ৪৯টি দোচালা বসতঘর, ৬৫টি রান্নাঘর ও ৬০টি গোয়াল ঘর ও প্রায় ৩০টি কাচারি ঘর ও মসজিদ লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ধান, মরিচ, বাদামসহ বিভিন্ন সবজি রয়েছে। এছড়া অসংখ্য গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ গবাদি পশুও মারা গেছে।
Advertisement
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে জেলার ৫টি উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নের ৪৯টি গ্রাম ও ২০ চরাঞ্চলের ১৩৯টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর আধাপাকা ও টিনের ১০৫টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ৩৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ লাইনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতি উপজেলায় ১০ টন করে চাল, ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ২৫ হাজার করে নগদ টাকা বিতরণ করা হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পর্যাক্রমে ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
ইকরাম চৌধুরী/এমবিআর/জেআইএম
Advertisement