তৃণমূল থেকে বাছাইকৃত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামীতে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে সাফল্য তুলে আনার পরিকল্পনা করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। আর এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য বেছে নেয়া হয়েছে ১৩ টি খেলাকে।
Advertisement
তবে যে খেলাগুলোকে বেছে নেয়া হয়েছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুড়ছে ক্রীড়াঙ্গনে। উশু, কারাতে ও তায়কোয়ানদোর মতো অজনপ্রিয় খেলা এই তালিকায় থাকলেও নেই অ্যাথলেটিকস। যে খেলাটিকে বলা হয় ‘মাদার অব অল স্পোর্টস।’
আরচারি, কাবাডি, শ্যুটিং, ভলিবল, ভারোত্তোলন, হ্যান্ডবল, টেনিস, বাস্কেটবল, সাইক্লিং, সুইমিং, কারাতে, উশু ও তায়কোয়ানদো- এই ১৩ খেলাকে বিশেষ এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য বেছে নিয়েছে সরকার। বাছাই নিয়ে অনেক ফেডারেশনই ক্ষুব্ধ, হতাশ। ক্রীড়াঙ্গনের প্রভাবশালী সংগঠকদের ফেডারেশনকেই এ কর্মসূচির জন্য বেছে নেয়া হয়েছে- এমন অভিযোগও উঠেছে।
বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু হতাশ দেশের অন্যতম প্রধান খেলাটিকে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে না রাখায়। তিনি বলেন, ‘আমি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে চিঠি দেবো যাতে অ্যাথলেটিকসকে অন্তর্ভূক্ত করা হয় এ তালিকায়।’
Advertisement
ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে সাফল্য আনার সম্ভাবনা আছে এমন খেলাগুলোকে বেছে নেয়ার জন্যই এই পরিকল্পনা সরকারের। কিন্তু যে ১৩ খেলা নির্বাচন করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ক্রীড়াঙ্গনে। বিশেষ করে বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবলের মতো টিম ইভেন্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে সাফল্য আনা কঠিন মনে করছেন অনেকে। অথচ দাবার মতো সম্ভাবনাময় খেলাকে রাখা হয়েছে এই কর্মসূচির বাইরে।
১৩ খেলা বাছাই প্রক্রিয়া কতটা সঠিক হয়েছে সে প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, ‘অ্যাথলেটিকস নেই সেটা আমার চোখেও পড়েছে। আসলে এই উদ্যোগটা শুরু হয়েছিল আগের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সময়ে। এ তালিকাটা আমাদের হাতে তৈরি না। অ্যাথলেটিকসের বিষয়ে আমি বলবো থাকা উচিত ছিল। কারণ এটা ‘মাদার অব অল স্পোর্টস।’ এখনো সময় আছে তালিকাটা নতুন করে তৈরির। দেখি আমি বিষয়গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবো। আরো দু-একটি খেলা আছে তালিকায় তাদের সম্ভাবনা কতটুকু তা নিয়ে আমার মনেও খটকা আছে।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আভাস দিলেন যে ১৩ খেলা প্রাথমিকভাবে বেছে নেয়া হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য সেখানে পরিবর্তন আসতে পারে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যে খেলাগুলোকে বেছে নিচ্ছি সেগুলোর প্রতি বেশি করে নজর দেবো, পৃষ্ঠপোষকতা করবো। আর প্রতি এক বছর অন্তর মূল্যায়ন করা হবে কোন খেলায় কতটা কাজ হয়েছে। যে ফেডারেশনগুলো ঠিকমতো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারবে না সেগুলোকে বাদ দিয়ে নতুন খেলা অন্তর্ভুক্ত করবো।’
এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কত টাকা লাগবে তা এখনো ঠিক হয়নি উল্লেখ করে দেশের ক্রীড়ার এ অভিভাবক বলেন, ‘আগামী জাতীয় বাজেটের আগেই বাছাইকৃত খেলাগুলোর জন্য এই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে কত টাকা লাগবে তা ঠিক করে ফেলবো। তারপর বলা যাবে আমাদের এই কর্মসূচিতে কত টাকা লাগতে পারে।’
Advertisement
বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ১৩ খেলাআরচারি, কাবাডি, শ্যুটিং, ভলিবল, ভারোত্তোলন, হ্যান্ডবল, টেনিস, বাস্কেটবল, সাইক্লিং, সুইমিং, কারাতে, উশু ও তায়কোয়ানদো।
আরআই/এসএএস/পিআর