দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাহবুবা খাতুন। কিন্তু জিপিএ-৫ প্রাপ্তির আনন্দে হাসতে পারছে না মাহবুবা। উল্টো কাঁদছে সে। কারণ ভালো ফলাফল নিয়ে এসএসসি পাস করলেও কলেজে ভর্তি ও লেখাপড়া নিয়ে রয়েছে তার অনিশ্চয়তা।
Advertisement
রাজমিস্ত্রি বাবার আয়েই চলে তাদের পাঁচজনের সংসার। এরই মধ্যে রয়েছে তাদের তিন ভাই-বোনের লেখাপড়া। তাই ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ তার কপালে।
মাহবুবা এবার যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মধুপুর-বাহাদুরপুর মাধ্যমকি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। মাহবুবার বাবা আবুল হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও মা বিউটি খাতুন গৃহিণী।
মাহবুবা জানায়, মণিরামপুরে তাদের ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কোনো সহায়-সম্পদ নেই। বাবা পরের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বর্গা চাষে ছয় মাসের খাদ্যের সংস্থান হয় তাদের। আর বাকিটা চলে রাজমিস্ত্রির পেশার আয়ে।
Advertisement
মাহবুবা আরও জানায়, তারা তিন ভাই-বোন লেখাপড়া করছে। বড় বোন হাবিবা খাতুন যশোর সরকারি এমএম কলেজে গণিত বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী। তার লেখাপড়ার খরচ পাঠাতে হয়। সে এ বছর এসএসসি পাস করলো। আর ছোট ভাই আহম্মদ উল্লাহ ৭ম শ্রেণির ছাত্র।
দরিদ্র বাবার একার রোজগারে চলে সংসার ও তিন ভাই-বোনের লেখাপড়ার খরচ। সে কারণে অর্থাভাবে সহপাঠীদের মতো ঠিকমতো কোচিং করতে পারেনি সে। তারপরও অদম্য মেধাবী মাহবুবা খাতুন তার সাফল্য ছিনিয়ে এনেছে। এখন তার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু যেখানে বাবাকে অন্য ভাই-বোনদের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে তার এই স্বপ্ন কীভাবে পূরণ হবে জানে না সে।
মাহবুবার বাবা আবুল হোসেন বলেন, আমার মেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এখন কলেজে বিজ্ঞানে পড়তে কোচিং-প্রাইভেট পড়াতে হয়। এতে অনেক খরচ।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বলেন, মেয়ের স্বপ্ন সে ডাক্তার হবে। কিন্তু কীভাবে তাকে পড়াবো তা আমি জানি না। সবাই যদি একটু সহযোগিতা করে তাহলে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে।
Advertisement
মিলন রহমান/এএম/পিআর